বাংলাদেশে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ: একটি নীরব মানসিক রোগের রূপ

দুশ্চিন্তা মানেই এখন আর ‘সাময়িক কষ্ট’ নয়, বরং দেশের মানুষের মধ্যে এটা হয়ে গেছে একটা বড় ধরনের ‘নীরব রোগ’। কাজের চাপ, বাড়ির ঝামেলা আর অর্থের চিন্তা মিলিয়ে যেন সারাবিশ্বই মাথায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, আর তার মধ্যে ১ শতাংশই দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগে আক্রান্ত।
ঢাকা মেডিকেলের একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বললেন, “দুশ্চিন্তা হালকা মনে হলেও, যদি উপেক্ষা করা হয়, তবে এটি শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে মারাত্মক সমস্যায় ফেলে দিতে পারে। কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে শুরু করে ঘুমের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া পর্যন্ত নানা জটিলতা দেখা দেয়।”
দুশ্চিন্তার লক্ষণ:
১. অতিরিক্ত উদ্বেগ এবং সামাজিক পরিস্থিতিতে ভয় পাওয়া
২. হঠাৎ আতঙ্ক বা প্যানিক অ্যাটাক
৩. ঘুমের সমস্যা, যেমন রাতে ঘুম না হওয়া বা তৃপ্তিহীন ঘুম
৪. শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া অনুভব
৫. অস্থিরতা ও শারীরিক দুর্বলতা
কারণসমূহ:
জীবনের চাপ, পারিবারিক সমস্যা, অতীতের ট্রমা, জেনেটিক কারণ, ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ এবং মাদক সেবন দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তোলে।
চিকিৎসা ও প্রতিকার:
থেরাপি, প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং সহানুভূতিশীল পারিবারিক পরিবেশ দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগকে লুকিয়ে না রেখে খোলামেলা আলোচনা করার পরামর্শ দেন।
সচেতনতা জরুরি:
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক সমস্যায় চিকিৎসা নেওয়াও স্বাভাবিক একটি বিষয়, যেমন শারীরিক অসুস্থতায় চিকিৎসা করা হয়। ভয় পাওয়ার কিছু নেই, চিকিৎসা ও সহায়তায় উদ্বেগ জয় করা সম্ভব।