গাজায় শান্তি ও ত্রাণের দাবিতে অস্ট্রেলিয়ায় লাখো মানুষের বিক্ষোভ, অংশ নিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে শান্তি চুক্তি কার্যকর ও ত্রাণ সরবরাহের দাবিতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হলো নজিরবিহীন বিক্ষোভ। প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে রবিবার (৩ আগস্ট) সিডনির বিখ্যাত হারবার ব্রিজজুড়ে আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশ নেন লাখো মানুষ, যাদের মধ্যে ছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জও।
‘মার্চ ফর হিউম্যানিটি’ নামের এই কর্মসূচিতে বিক্ষোভকারীরা ক্ষুধার প্রতীক হিসেবে হাতে হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে অংশ নেন। গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট ও খাদ্যাভাবের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তারা দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও অবাধ ত্রাণ সরবরাহের দাবি জানান।
এদিকে, নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের পুলিশ ও প্রিমিয়ার গত সপ্তাহে ব্রিজে বিক্ষোভ ঠেকাতে চেষ্টা চালায়। নিরাপত্তা ও যান চলাচল বিঘ্নের আশঙ্কা থাকায় তারা বিক্ষোভের বিরোধিতা করেন। তবে রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট শনিবার রায়ে জানায়, ব্রিজে বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে আয়োজকদের।
গাজার চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। সংঘর্ষের কারণে উপত্যকাজুড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ খাদ্য সংকট, যা এখন দুর্ভিক্ষের পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বিক্ষোভ ঘিরে হারবার ব্রিজ এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। একই ধরনের আরেকটি সমাবেশ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরেও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে, গাজায় চলমান যুদ্ধ ও মানবিক সংকটের কারণে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ফ্রান্স ও কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাজ্যও বলেছে, মানবিক অবস্থা আরও অবনতি হলে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে।
তবে এসব স্বীকৃতিকে ‘হামাসকে পুরস্কৃত করার শামিল’ বলে মন্তব্য করেছে ইসরায়েল।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে থাকলেও এখনো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেননি। তিনি ইসরায়েলের ত্রাণে বাধা ও বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার সমালোচনা করলেও কূটনৈতিক অবস্থানে আরও কঠোর হননি।