কাফনের কাপড় পরে হলেও মেলা করবেন গয়েশ্বর

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৈশাখী মেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ও প্রশাসনিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কাফনের কাপড় পরার প্রয়োজন হলেও ওই মাঠে মেলা করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গতকাল শনিবার দুপুরে মাঠ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। ১৮৪২ সাল থেকে ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি ‘বিটি মাঠ’ নামে পরিচিত।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘কাফনের কাপড় পরার প্রয়োজন হলেও এই মাঠে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবেই। যুগের পর যুগ ধরে এখানে মেলা হচ্ছে, কেউ তা বন্ধ করতে পারবে না।’
বিগত সরকারের আমলে এই মাঠে মেলার আয়োজন করা যায়নি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে আমাদের এ মাঠে বৈশাখী আনন্দ পালন বন্ধ ছিল। এখন খুনি হাসিনা নেই, আমরা মুক্ত। এ মাঠে আনন্দ হবে, মেলা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বতন সরকারের সময় সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাঠটির নাম পরিবর্তন করে তার পিতার নামে রাখেন। বর্তমানে এটি ক্রীড়া উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চলে গেছে, যা আমাকে হতাশ করেছে।’
জানা গেছে, মাঠটি বর্তমানে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে কর্পোরেট ঢাকা লীগ টুর্নামেন্ট চলমান রয়েছে এবং ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একটি ম্যাচও এ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।সম্প্রতি ক্রিকেটার জামিল মহসিনসহ কয়েকজন খেলোয়াড় অভিযোগ করেন, মেলার জন্য স্টল ও মঞ্চ নির্মাণে খেলার বিঘ্ন ঘটছে।
এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়ার নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জান্নাতুল মাওয়া মাঠে উপস্থিত হয়ে মেলা বন্ধের নির্দেশ দেন।
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। কাফনের কাপড় পরে হলেও মেলা করব।’
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ জানান, স্টেডিয়ামে মেলার আয়োজনের কোনো অনুমতি প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়নি। আবেদন পাওয়া গেছে, তা পুলিশ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে ইউএনও রিনাত ফৌজিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে উপরের নির্দেশে সেই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির নেতারা এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
