বাসদের চার দফা দাবি: ‘গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পদদলিত হচ্ছে’

গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের বিচার দ্রুত ও দৃশ্যমান করা, সুষ্ঠু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা, এবং জনগণের স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক গণসমাবেশে দলটি এই দাবি উত্থাপন করে।
‘এক স্বৈরাচার পতনের পর আরেক দখলদার উঠে আসছে’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “এই দেশের মানুষ অন্যায়ের কাছে কখনও মাথানত করেনি। তাই ২০২৪ সালে অভ্যুত্থান ঘটেছিল। কিন্তু জনগণ যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এক বছরের মধ্যেই পদদলিত হতে শুরু করেছে।”
বক্তারা অভিযোগ করেন, “স্বৈরাচার পতনের পর জনগণ আশা করেছিল মুক্তি, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মব হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্মীয় ও জাতিগত নিপীড়ন—সবই আগের মতো চলছে। ভাস্কর্য ভাঙচুর, মাজার ও বাউল আখড়া ধ্বংস, নারীদের খেলাধুলায় বাধা দেওয়া—এসব অশনি সংকেত।”
তারা প্রশ্ন তোলেন, “সরকার কি তবে এই মবতন্ত্রকে প্রশ্রয় দিচ্ছে?”
বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়া, রাখাইনে করিডোর প্রতিষ্ঠা, তুরস্ক-কাতার মিলে অস্ত্র কারখানা তৈরির উদ্যোগ, ও স্টার লিংকের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতির বদলে এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রমে লিপ্ত হয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি করছে।”
বাসদের চার দফা দাবি:
১. গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার দৃশ্যমান করা এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা।
২. মব সন্ত্রাস বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধ এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৩. দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল—চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা, রাখাইনে করিডোর, তুরস্ক-কাতার যৌথ সমরাস্ত্র কারখানা, স্টার লিংকের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি ইত্যাদি।
৪. মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২০২৪-এর অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া।