কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দম্পতির ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা, মামলা দায়ের

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক দম্পতির ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৫ জুন) ভোর রাতে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের ৭ নম্বর কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন—সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের রুমি বেগম (৩৮) ও তাঁর স্বামী মো. আব্দুল করিম (৪২)। বর্তমানে তারা কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগীর ভাই মো. আব্দুস সালাম এ ঘটনায় কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় ৬-৭ জনের একটি যুবক দল দলবদ্ধভাবে হাসপাতালে প্রবেশ করে। তারা ঘুমন্ত অবস্থায় রুমি বেগমের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এ সময় স্বামী আব্দুল করিম বাধা দিলে তাকেও লাঠিসোটা ও ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। এদের কাছ থেকে কিছু নগদ টাকাও ছিনিয়ে নেয় তারা। ঘটনায় উপস্থিত অন্য রোগী ও স্বজনরা বাধা দিলে তাদেরকেও হুমকি দেওয়া হয়।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শহিদুল্লাহ বলেন, “এটি একটি অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করেছি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করছি।”
জানা গেছে, ঘটনার আগের দিন বিকেলে মাত্র ২,২০০ টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে কিশোর সোহেল, ইব্রাহিম ও জামিল আব্দুল করিমের বাড়িতে হামলা চালায় এবং রুমি বেগমের কপালে চাকু দিয়ে আঘাত করে। এতে তার চারটি সেলাই পড়ে। এলাকাবাসী হামলাকারীদের আটক করে পুলিশে দেয়, তবে পরবর্তীতে উভয়পক্ষের সিদ্ধান্তে অভিযুক্তদের অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ওই কিশোররা আবারও হামলা চালায় বলে অভিযোগ পরিবারের।
আহত আব্দুল করিম বলেন, “আমার স্ত্রীর ওপর প্রথমে হামলা চালিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করাই। এরপর হাসপাতালে গিয়েও তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা কিশোর গ্যাং দমনে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দাবি জানিয়েছেন।