কুড়িগ্রামের সন্তোষপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৭ মে. টন সরকারি চাল জব্দ করেছে সেনাবাহিনী

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৭ মেট্রিক টন সরকারি ভিজিএফের চাল উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
বুধবার (৪ জুন) বিকেল সোয়া ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ সাথে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের আশপাশে বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে এসব চাল উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত চাল থানায় নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলার প্রক্রিয়া চলছে। প্রশাসন জানায়, ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে ওই ইউনিয়নের ৭ হাজার ৯৬৯ দুস্থ মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে বিতরণের জন্য ভিজিএফ প্রকল্পের প্রায় ৮০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব চাল আজ বিতরণ করা হচ্ছিল। কিন্তু অতি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ দেয়া এসব চালের ১০ কেজি করে স্লিপ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। ব্যবসায়ীরা সেসব স্লিপে চাল উত্তোলন করে পরিষদের আশপাশের বিভিন্ন গুদামে মজুদ করেন।
স্থানীয়রা বিষয়টি প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে জানালে বিকেলে প্রশাসন থানা পুলিশকে নিয়ে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এ সময় অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের স্টোরম্যান ও চাল বিতরণের সাথে নিয়োজিত ইউপি সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্তী বাজারের বিভিন্ন দোকানের গোডাউন থেকে দুঃস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণকৃত খাদ্য অধিদপ্তরের সিলসম্বলিত কিছু বস্থাসহ প্রায় দুইশ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে পদত্যাগ করলে ওই ইউনিয়নের সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়য়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। নাগেশ্বরী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে আর এক ইউপি সদস্য মোস্তফা জামানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ফ্যাসিস্ট দোসর হিসেব তাকেও গ্রেপ্তার করে থোনা পুলিশ। সবশেষ গত ১২ নভেম্বর ওই ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য খাদিজা বেগমকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। খাদিজা বেগমের তত্ত্বাবধানে এসব চাল বিতরণ চলছিল। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খাদিজা বেগম, বলেন, পরিষদে ঠিক মতো চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাইরে ইউপি সদস্য কি করেছেন আমি তা জানিনা।
নাগেশ্বরী থানার এস আই অপূর্ব সরকার বলেন, চাল থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। থানায় মামলা হবে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এসব চাল প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, প্রায় দুইশ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলো থানায় নেয়া হয়েছে। নিয়মিত মামলা হবে। তদন্তে সম্পৃক্ত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।