দ্বিতীয় জানাজা ও দাফন সম্পন্ন, এলাকায় শোকের ছায়া!
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড (Bearings Pad) মাথায় পড়ে নিহত আবুল কালামের (৩৬) দাফন আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) শরীয়তপুরের নড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কবরস্থানে সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে, সকাল ১০টার দিকে নিজ গ্রাম নড়িয়ার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় নিহত কালামের পরিবার ও এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহত আবুল কালাম আজাদ শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠী এলাকার মৃত আব্দুল জলিল চোকিদারের ছেলে। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতেন। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ (৫) এবং সুরাইয়া আক্তারকে (৩) নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায় বসবাস করতেন।
জানা যায়, গতকাল রবিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার পথে মেট্রোরেলের ৪৩৩ নম্বর পিলারের বিয়ারিং প্যাড হঠাৎ খুলে নিচে পড়ে। ঘটনাস্থল দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ভারী ধাতব বস্তুটি আবুল কালামের মাথায় আঘাত হানে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই প্রচুর রক্তপাত হয়। স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই দুর্ঘটনার পর পরই মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পরে আংশিকভাবে চলাচল শুরু হলেও দীর্ঘ প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে পুরো উত্তরা-মতিঝিল রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সাথে নিহতের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের কোনো কর্মক্ষম সদস্য থাকলে তাকে মেট্রোরেলে চাকরির ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস জানান, আবুল কালামের এমন অকাল মৃত্যুতে উপজেলা প্রশাসন শোকাহত। তিনি বলেন, "আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি। আমরা সার্বক্ষণিক তার পরিবারের পাশে আছি এবং পরিবারের লোকজন যে কোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনকে পাশে পাবে। "
নিহত আবুল কালামের এমন আকস্মিক ও মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়িতে এখন শোকের মাতম চলছে। পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।


