সাবেক এমপি শাম্মি আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় রিয়াদের স্বীকারোক্তি, আরও তিন আসামি কারাগারে

সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে করা গুলশান থানার মামলায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালতে রিয়াদ এই জবানবন্দি দেন। একই দিনে রিয়াদসহ চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মতি জানান। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান আদালতের অনুমতি নিয়ে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জবানবন্দিতে রিয়াদ জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী লোকজনকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহায়তা করতেন তিনি। ১৭ জুলাই রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার মাধ্যমে গুলশান জোনের ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি জানান, শাম্মি আহমেদ তার গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন। পরে পুলিশের সহযোগিতায় রাত দুইটার দিকে রিয়াদসহ কয়েকজন ওই বাসায় যায়।
রিয়াদের ভাষ্যমতে, সেদিন শাম্মি আহমেদ বাসায় ছিলেন না। পরে সকাল সাড়ে ৭টায় তারা ফিরে আসেন। এরপর জানে আলম অপু তাকে জানান, ওই বাসা থেকে তিনি শাম্মির এয়ারপড নিয়ে এসেছেন। সকাল ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু তা ফেরত দিতে গেলে, অপু বাসায় থাকা শাম্মির স্বামীকে হুমকি দেন এবং ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। অবশেষে ১০ লাখ টাকা নিয়ে সেখান থেকে চলে যান তারা এবং পরবর্তীতে টাকা ভাগ করে নেন।
আদালতে অন্য তিন আসামি—ইব্রাহিম হোসেন, সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সাবেক নেতা। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠন থেকেও তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে অভিযুক্ত জানে আলম অপুর বিরুদ্ধে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে রিমান্ডে আছেন। এছাড়া ২৭ জুলাই আদালত রিয়াদসহ অন্যান্য আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। আর আইনের সংঘাতে জড়িত অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. আমিনুল ইসলামকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
২৭ জুলাই গুলশান থানায় সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাটি করেন। এজাহারে বলা হয়, ১৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে আসামিরা শাম্মি আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা জানালে তাকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন কাজী গৌরব অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন এবং কিশোর আমিনুল ইসলাম। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।