কমতির দিকে ডিম-মুরগিও সবজির দাম কমাচ্ছে শিম ও ফুলকপি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পেঁয়াজ ও ডাল
 
                                        
                                    সপ্তাহ দুয়েক আগে বেশির ভাগ সবজির দাম ছিল কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। কয়েকটির দাম শতকও ছাড়িয়েছিল। তবে এখন অনেকটা স্থিতিশীল হয়ে আসছে বাজার। গত দুই সপ্তাহের তুলনায় বেশ কয়েকটি সবজির দর ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমতে দেখা গেছে। বিশেষ করে শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম কমার কারণে অন্য সবজির দর কমতির দিকে। এর প্রভাবে ডিম ও মুরগির বাজারেও কিছুটা স্বস্তির আভাস মিলছে।
গতকাল বুধবার ঢাকার তেজগাঁও কলোনি বাজার, আগারগাঁও ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের প্রধান সবজি শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। বাজারে এসব সবজির সরবরাহ বেশ বেড়েছে। ফলে অন্য সবজির দাম কমছে। তাছাড়া এখন বৃষ্টিপাতও কম। তাই সবজির উৎপাদন ভালো। সব মিলিয়ে জোগান বাড়ার কারণে বাজারে সবজির দর কমতে শুরু করেছে।
মাসখানেক আগে থেকে বাজারে শিম আসা শুরু করে। গত কয়েক দিন ধরেই দেখা মিলছে ফুলকপি ও বাঁধাকপির। শুরুর দিকে এসব সবজির দাম আকাশছোঁয়া থাকলেও এখন অনেকটাই নাগালে। এক মাস আগে ২০০ টাকায় কেজি বিক্রি হওয়া শিম এখন কেনা যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। একইভাবে ছোট আকারের প্রতি পিস কপি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দর কম; কেনা যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
দুই সপ্তাহ আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বরবটি ও কাঁকরোল বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। দাম কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। অর্থাৎ, কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। একইভাবে সপ্তাহ দুয়েক আগের ৭০ থেকে ৮০ টাকার ঢ্যাঁড়শ ও পটোল গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। সেই হিসেবে এ দুই সবজির দর কেজিতে কমেছে ৩০ টাকার মতো।
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা কমে উচ্ছে ও ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। এভাবে দর কমে মুলা ৩০ থেকে ৪০, কাঁচা পেঁপে ২৫ থেকে ৩৫ এবং লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৪০ টাকার মতো কমে টমেটো ও শসা যথাক্রমে ৯০ থেকে ১০০ ও ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কমছে কাঁচামরিচের ঝালও। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ১৪০ থেকে ১৭০ টাকায়। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে।
সবজি ব্যবসায়ীদের মতে, বাজারে শীতকালীন তিন সবজি– শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপির সরবরাহ বেশ বেড়েছে। এ জন্য বাজার কমতির দিকে রয়েছে। আগারগাঁওয়ের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম সমকালকে বলেন, পাইকারি বাজারে দর কমতির দিকে। এ কারণে তারাও কম দামে বিক্রি করছেন। কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া বলেন, এখন বৃষ্টি নেই। প্রতি রাতে শিম ও কপির গাড়ি আসছে। শিমের দাম কমছে। এ জন্য সব সবজির দর কমা শুরু হয়েছে।
সবজির দর কমার ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে ডিম ও মুরগির বাজারে। গত সপ্তাহে ফার্মের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয় কমবেশি ১৪০ টাকা দরে। ডজনে ১০ টাকা কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির। এখন প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আগের দরেই বেচাকেনা হচ্ছে গরুর মাংস। প্রতি কেজির দাম ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। মাছের বাজারেও তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
তেজকুনিপাড়ার মুরগি ব্যবসায়ী মোশাররফ মিয়া বলেন, ব্রয়লারের দর ১০ টাকার মতো কমেছে। কিন্তু সোনালি মুরগির দর কমেনি।
পেঁয়াজের বাজার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশি পেঁয়াজেই চলছে বাজার। ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে।
এদিকে দেশি মসুর ডালের দাম আগের মতো ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও আমদানি করা মসুর ডালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায়। চিনির বাজারেও কিছুটা ভালো খবর রয়েছে। প্রতি কেজি চিনি কেনা যাচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা দরে।
 
            
 
                                                                    

 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                                                         
                                                        