নোবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত হয়েছে। দিনব্যাপী এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে নোবিপ্রবি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল প্রথমে জুলাই শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী,নোবিপ্রবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে শুরু হয় আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। সভার শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
উপাচার্যের বক্তব্যে ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে সবাইকে ৩৬ জুলাইয়ের শুভেচ্ছা। ৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। আজকের এই দিনে আমরা ১৬ বছরের অত্যাচার, নির্যাতন, দাম্ভিকতা এবং ভোটাধিকার হরণের মতো অন্যায় থেকে মুক্তি পেয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা এই হত্যা-নির্যাতনে সহায়তা করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই। একই সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অন্যায় বা বৈষম্যের স্থান হবে না। আমরা সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই।'
উপাচার্য আন্দোলনের শহীদ পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন এবং শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, 'শিক্ষা, গবেষণা, জ্ঞানচর্চা ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি উদাহরণ হয়ে থাকে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, 'আজ আমরা সবাই অন্তর থেকে জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে এখানে সমবেত হয়েছি। এই গণআন্দোলনকে বিভক্ত করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। জুলাইয়ের ঐক্যকে আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং এ চেতনাকে বুকে ধারণ করতে হবে।'
আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি, আহত শিক্ষার্থী, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মাননা স্মারক, আর্থিক সহায়তা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। এছাড়াও জুলাই স্মৃতি চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা, গণঅভ্যুত্থান শর্ট ফিল্ম ও ডকুমেন্টারি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এদিন বিকেলে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, ভিডিও প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেয়ালিকা প্রদর্শনী।