পাওনা গ্রাচ্যুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পেতে এসডিএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর স্বারকলিপি!
৪টি অঞ্চলের অধীনে ৪৫টি ক্লাস্টারে প্রায় ৩০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। প্রকল্পের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসলেও ভবিষ্যত আনুতোষিক তহবিল (গ্রাচুইটি) ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রাপ্য অর্থ প্রদানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত না আসায়, সোশাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) ভোলা রিজিয়নের আওতাধীন ভোলা শহরের কালিবাড়ি রোড়ের আঞ্চলিক কার্যালয়ে এসডিএফ এর ১০টি উপজেলার (ক্লাস্টারের) ক্লাস্টার অফিসের সকল কর্মী ও কর্মকর্তনের পাওনা গ্রাচ্যুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পেতে এসডিএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। স্বারকলিপিটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর পক্ষে এসডিএফএর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রওনক ফেরদৌস গ্রহন করেন।
গত রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে শহরের কালিবাড়ি রোড়ের সোশাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) আঞ্চলিক কার্যালয়ে এ স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর পক্ষে উপস্থিত থেকে এসডিএফএর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রওনক ফেরদৌস স্বারকলিপি গ্রহন করেন। তিনি তা গ্রহণ করে তাৎক্ষনিকভাবে এসডিএফ প্রধান কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর নিকট পাঠিয়ে দেন। প্রধান অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসডিএফ এসসিএমএফ প্রকল্পের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুর ইসলাম এবং কো মানেজমেন্ট এক্সপার্ট আলম হোসেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়:
১. প্রভিডেন্ট ফান্ড ও আনুতোষিক তহবিল এর প্রাপ্য অর্থ প্রকল্প শেষ হওয়ার সাথে সাথে দেওয়া হবে মর্মে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে আমাদেরকে লিখিতভাবে আশ্বস্ত করতে হবে। (অডিট আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে যে সকল স্টাফ অব্যাহতি নিয়েছেন তাদের মধ্যে থেকে অনেকেই প্রভিডেন্ট ফান্ড ও আনুতোধিক তহবিল এর টাকা গ্রহন করেছেন।
২. যেহেতু এসসিএমএফপি, কম্পোনেন্টন্ট-৩ প্রকল্পসহ আমরা বিগত ১৭ বছর ধরে ৪টি প্রকল্প নিরলসভাবে ও সফলতার সহিত বাস্তবায়ন করেছি। যেহেতু ২৯.১০.২০২৫ ইং তারিখে বি-স্ট্রং প্রকল্পের চাকুরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে আমাদের পূর্বের অভ্যন্তরীণ কর্মমূল্যায়নের ভিডিতে পরীক্ষা ছাড়াই বি.স্ট্রং প্রকল্পে পদায়ন করতে হবে। এছাড়াও যাদের উক্ত প্রকল্পে পদায়ন করা সম্ভব নয় তাদেরকে RELI এবং সিপিএসপি প্রকল্পের শূণ্য পদে পদায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৩. বর্তমান বিদ্যমান বেতন কাঠামো বজায় রেখে মূল্যায়নের ভিত্তিতে এসসিএমএফ প্রকল্পের স্টাজদেরকে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।
৪. যেহেতু এসসিএমএফ প্রকল্পে কর্মরত স্টাফ সংখ্যার চেয়ে বি-স্ট্রং প্রজেক্টে পদ সংখ্যা কম। সেহেতু এসসিএমএফপি এর দক্ষ কর্মীদেরকে নিয়োগ প্রদান করলে আর নতুন কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রয়োজন নেই বিধায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করতে হবে।
এ বিষয়ে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) এর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এসডিএফ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের অধীনে একটি প্রতিষ্ঠান, যা বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে গ্রামীণ দরিদ্র ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় "সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট (এসসিএমএফপি)" এর কম্পোনেন্ট-৩ প্রকল্পটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসাবে এসডিএফ-২০২০ইং সালের মার্চ মাসে বাস্তবায়ন শুরু করে এবং চলতি নভেম্বর ২০২৫ইং তারিখে সমাপ্তির পথে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন ও বিকল্প পেশায় নিয়োজিত করা।
উক্ত প্রকল্প উপকূলীয় অঞ্চলে বাস্তবায়িত হওয়ায় এর কার্যক্রম অত্যন্ত দুঃসাধ্য ছিল। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যা, মহামারিসহ সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলাম। এমনকি করোনা মহামারির সময়ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করেছি।
বর্তমানে ৪টি অঞ্চলের অধীনে ৪৫টি ক্লাস্টারে প্রায় ৩০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছি, এতে সবাই প্রকল্প শেষে আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছি। প্রকল্পের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসলেও ভবিষ্যত আনুতোষিক তহবিল (গ্রাচুইটি) ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রাপ্য অর্থ প্রদানের বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোনো স্পষ্ট নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।
অথচ এই তহবিল আমাদের জীবনের পরবর্তী সময়ের একমাত্র নিরাপত্তা দিয়ে আমাদের সন্তানদের শিক্ষা, পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ ও বৃদ্ধ পিতা-মাতার চিকিৎসার ব্যয় মেটানোর একমাত্র অর্থ। প্রকল্পের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসলেও ভবিষ্যত অনুতোষিক তহবিল (গ্রাচ্যুইটি) ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রাপ্য অর্থ প্রদানের বিষয়ে এসডিএফ এর সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোনো স্পষ্ট নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।
তারা আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এসডিএফ তার সুনাম বজায় রেখে দীর্ঘদিনের কর্মীদের ন্যায্য পাওনা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ ও যোগ্যকর্মীদের বি-স্ট্রং, RELI এবং সিপিএসপি প্রজেক্টে পদায়ন করবে।
উল্লেখ্য তাদের উপরোক্ত দাবিগুলো না মানা হলে তারা আগামী শনিবার থেকে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


