কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মৎস্য দিবস ২০২৫ অনুষ্ঠিত
মৎস্য সম্পদ রক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। ক্ষুদ্র জেলেদের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ সকল দাবিকে সামনে রেখে কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মৎস্য দিবস ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কক্সবাজারে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। কোস্ট ফাউন্ডেশন প্রতি বছরের ন্যায় গত এ বছর ও কক্সবাজারে 'বিশ্ব মৎস্য দিবস ২০২৫' উৎযাপন করেছে। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল টেকসই মৎস্য আহরণ সমৃদ্ধির সোপান, জলজ বাস্তুতন্ত্র বাঁচান এবং মৎস্য সম্পদ রক্ষা করুন। দিবসটি উপলক্ষে সংস্থাটি বর্নাঢ্য র্যালী এবং বিভিন্ন সচেতনতামূলক স্লোগানের মধ্য দিয়ে পালন করে।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: রাশেদ আহমেদ এই বর্ণাঢ্য র্যালীর উদ্বোধন করেন। তিনি এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, খুরুশকুল মৎস্যজিবি সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো: গিয়াস উদ্দিন, পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রোকসানা আক্তার রুপা। এছাড়া এই আয়োজনে জেলা নেটওয়ার্কিং কমিটির বিভিন্ন সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
র্যালীটি কক্সবাজার খুরুশকুল ইউনিয়নের বায়ু বিদ্যুৎ হতে চৌফলধন্ডি বাজারের মৎস্য বন্দরে গিয়ে শেষ হয়।পরবর্তীতে অনুষ্ঠানের নির্ধারিত কার্যক্রম অনুসারে 'বাংলাদেশের উন্মুক্ত জলাশয়ের ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য অবস্থা এবং চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জেলেদের জীবিকায়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরিন্বিতকরণ। ক্ষুদ্র জেলেদের টিকে থাওতে হলে পাশাপাশি ইকোসিস্টেম বাঁচিয়ে রাখতে হলে বিকল্প কর্মসঙ্গস্থান সৃষ্টি ও তার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ, ও ব্যবসায়িক দক্ষতার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা শুধুমাত্র একমুখী পেশানির্ভর না হয়ে অন্য পেশার জন্য নিজেদের গড়ে তুলতে পারেন।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানে প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার মো: বাবুল হোসেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি নদীর প্রবাহ বজায় রেখে উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন মৎস্যজীবী নারী নেত্রী সামিমা আক্তার, কক্সবাজার সংবাদ সিবিএস প্রতিনিধি মো. ইমাম খায়ের, মো. ইব্রাহিম। হিসাব ও প্রশাসন কর্মকর্তা, খুরুশকুল ও পোকখালী ইউনিয়নের ক্ষুদ্র জেলে পরিবারে ৫৫ জন নারী ১৫ জন জেলে র্যালীতে অংশ নেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে উন্মুক্ত জলাশয়ের দূষণ এবং জলাশয়ের সুরক্ষার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দেন। বিশেষ অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে নদী, খাল ও অন্যান্য উন্মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজননের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। এছাড়া আলোচনার সময় নারী নেতৃবৃন্দ অ্যাকুয়াকালচার ও সমুদ্র খনন থেকে স্থানীয় ইকোসিস্টেম রক্ষা করার জোর দাবি তোলেন। এই পর্যায়ে সকলে একমত হন, এই দিবসটি শুধু উদযাপন করার জন্য নয়, আমাদের উচিত এই দাবিসমূহ নীতি প্রণয়নকারীদের নিকটে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।


