যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীর শরীরে ফুটন্ত ভাত ঢেলে দিলো স্বামী

ছোট ভাই বিদেশ যাবে। তাই নিজের শ্বশুরবাড়ি থেকে দাবিকৃত টাকা না পাওয়ায় স্ত্রী সুলতানা পারভিন নামের এক গৃহবধূর শরীরে ফুটন্ত ভাত ঢেলে দিয়েছেন স্বামী রবিউল বিশ্বাস। গত সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
তিন মাসের শিশুসন্তানকে নিয়ে সুলতানা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, তার শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ ঝলসে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সুলতানা পারভীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের কলোনীপাড়ার হাসান শেখের মেয়ে এবং কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের নগরবাকা গ্রামের রবিউল বিশ্বাসের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী সুলতানা পারভীন বলেন, দেবর বিদেশে যাবে এই জন্য আমার বাপের বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা আনতে বলে। আমার পরিবার হত দারিদ্র। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমার গায়ে ফুটন্ত ভাত পেছন থেকে ঢেলে দেন স্বামী ও শাশুড়ি।
তিনি আরও বলেন, এটাই প্রথম না এর আগেও আমাকে বিভিন্ন সময় অকারণে শারীরিক নির্যাতন করতো তারা।
সুলতানার ভাই সোহেল বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বিয়ের পর আসবাবপত্র থেকে শুরু করে যৌতুকের টাকাও দিয়েছি। তারা আমার বোনকে নির্যাতন করতো দেখেই এসব দিয়েছি, তবুও মন গলেনি তাদের।
তিনি বলেন, গত তিন মাস যাবৎ দুই লক্ষ টাকার জন্য শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে আসছে আমার বোনের স্বামী-শাশুড়ি। দিতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় নির্যাতন। নিজ নামে এনজিও থেকে টাকাও তুলে দিতে বলে। সম্মতি না দেওয়ায় আবারও মারধর করে তাকে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা প্রতিবেশিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত বোনের শ্বশুর বাড়ি যায়। সেখানে আমাদের উপরে বোনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন চড়াও হন। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সহায়তায় বোনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়ার হালসার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করি। পরে অবনতি হলে বোনকে নিয়ে বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। দ্রুত আমরা মামলা করবো।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট ডা. এহসানুল হক তম্ময় বলেন, ওনার শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ ঝলসে গেছে। শঙ্কামুক্ত কিনা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর বলা সম্ভব। নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।