"আগে ঘুষ দিতাম ১ লাখ, এখন ৫ লাখ" — অস্বাভাবিক দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরলেন মির্জা ফখরুল

দেশে ঘুষ-দুর্নীতির মাত্রা কীভাবে বেড়েছে, তা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আগে ঘুষ দিতাম এক লাখ টাকা, এখন দিই পাঁচ লাখ টাকা”—এই কথা একজন বড় ব্যবসায়ীর বরাতে উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমানের লেখা ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা: যাপিত জীবনের আলেখ্য’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “সচিবালয়ে হয়তো কিছুটা জবাবদিহিতা এসেছে, তবে বাইরে এখনো তেমন কিছু নেই। সবকিছু চলছে একে-অপরকে ম্যানেজ করার মাধ্যমে। একটি বড় ব্যবসায়ী আমাকে বলেছেন—আগে ঘুষ দিতাম এক লাখ টাকা, এখন পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। আমি জানি না এটাকে কীভাবে দেখবেন।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশের আচরণেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং তারা দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে—কখনো বলে মিলিটারির কাছে যাও, কখনো কোর্টে যাও। আসলে তারা আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে, কারণ বিগত সরকারের অনেক অপকর্মে তারাই প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা বারবার রাস্তায় নেমেছি, মানুষকে সংগঠিত করেছি। শেষ পর্যন্ত এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছি। তবে এটা যেন এমন না হয়—ডাক্তার এন্টিবায়োটিক দিলো আর সাথে সাথে রোগ ভালো হয়ে গেল। নতুন বাংলাদেশ গড়া সময়সাপেক্ষ কাজ।”
সমাজে হতাশা বাড়ার জন্য তিনি আংশিকভাবে মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে দায়ী করেন। বলেন, “প্রতিদিন নেতিবাচক খবর আমাদের ঘিরে ফেলছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ভয়াবহতা আমাদের সমাজকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে। এমনকি ‘মব’ তৈরি করে কখনো কখনো সরকারকে আক্রমণ করছে—এটা চিন্তার বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “রাতারাতি সবকিছু বদলে যাবে না, আবার গণতান্ত্রিক চর্চাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য থামিয়ে দিয়ে রাষ্ট্র মেরামত করা—তাও সমাধান নয়। আমাদেরকে সময় নিয়ে কাঠামোগত পরিবর্তনের পথে এগোতে হবে।”