প্রোটিনের অভাব: শরীরে দেখা দিতে পারে মারাত্মক সমস্যা!

প্রোটিন আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান উপাদান। এটি শুধু পেশি গঠন করে না, বরং হাড়, ত্বক, চুল ও মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাপ্তবয়স্ক নারীর দৈনিক প্রোটিনের প্রয়োজন ৪৬ গ্রাম এবং পুরুষের ৫৬ গ্রাম।
চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, শরীরে নিয়মিত প্রোটিনের অভাব ধীরে ধীরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। এর মধ্যে ঘুমের পরও ক্লান্তিভাব, দুর্বলতা, চুল পাতলা হওয়া, ত্বক শুষ্ক হওয়া, নখ ভেঙে পড়া, মনমেজাজ খারাপ বা বিষণ্ণতা এবং ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে।
প্রোটিনে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিন তৈরিতে সাহায্য করে। এর অভাবে মানসিক চাপ, হতাশা এবং খিটখিটে মনোভাব দেখা দেয়। এছাড়া, প্রোটিন রক্তে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে; ঘাটতি হলে হাত, পা ও পেটে অস্বাভাবিক ফোলা দেখা দেয়।
প্রোটিনের ঘাটতি বা অভাবে শরীরে যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে, সেগুলো প্রধানত চারটি মূল ক্যাটেগরিতে ভাগ করা যায়:
১. শারীরিক সমস্যা
পেশি দুর্বল হওয়া ও দ্রুত ক্লান্তি অনুভূত হওয়া।
হাড় দুর্বল হওয়া এবং হাড়ে ব্যথা বা চোট সহজে লাগা।
চুল পাতলা হওয়া, ছিটকে পড়া বা চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়া।
ত্বক শুষ্ক ও কোমলতা হারানো।
নখ দুর্বল হয়ে সহজে ভেঙে পড়া।
হাত, পা বা পেটে অস্বাভাবিক ফোলা (ওয়াটার রিটেনশন)।
২. মানসিক ও মস্তিষ্ক সংক্রান্ত সমস্যা
মনমেজাজ খারাপ বা বিষণ্ণতা (ডিপ্রেশন) বৃদ্ধি।
ঘুমের মান খারাপ হওয়া।
স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগের সমস্যা।
৩. হজম ও পেটের সমস্যা
ক্ষুধা বেশি লাগা বা বারবার খিদে অনুভব।
পেট ভরা না থাকা অনুভূত হওয়া।
দীর্ঘ সময় খাবার হজম না হওয়া।
৪. গুরুতর পুষ্টিহীনতা ও রোগ
কোয়াশিওর্কর: মারাত্মক প্রোটিন অভাবে শিশুদের দেহ ফুলে যাওয়া ও বৃদ্ধির সমস্যা।
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া।
দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের দুর্বলতা এবং শারীরিক কার্যকারিতা কমে যাওয়া।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে ডাল, ডিম, দুধ, মাছ, মুরগি, সয়া, পনির এবং বাদামসহ নানা ধরনের শুকনো ফল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রোটিন যথাযথভাবে গ্রহণ না করলে মারাত্মক পুষ্টিহীনতার সমস্যা, যেমন কোয়াশিওর্কর, দেখা দিতে পারে।