আজ বিকেলে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন।
বিশ্বব্যাপী অস্থির অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং দেশের অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি মাথায় রেখে এবার ‘সতর্ক ও নিয়ন্ত্রিত’ মুদ্রানীতি প্রণয়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এই নীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই থাকছে প্রধান অগ্রাধিকারে।
বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনও তা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় পৌঁছায়নি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে আগামী জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬.৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাস্তবে তা অর্জন বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫.৫০ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরেই সুদের হার কমিয়ে বিনিয়োগে গতি আনার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতির চাপে এবারও সুদের হার অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ফলে মুদ্রানীতিতে বড় কোনো নীতিগত পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
গত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ১০ শতাংশ। তবে জুন পর্যন্ত অর্জন হয়েছে মাত্র সাড়ে ৬ শতাংশ। একইভাবে সরকারি খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ঋণ হয়েছে। নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ২০ শতাংশের মতো ধরা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তনের পথে হাঁটবে না। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে আগামী জানুয়ারিতে পরবর্তী মুদ্রানীতিতে পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
এছাড়া মুদ্রা সরবরাহের হার নিয়েও থাকছে সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি। নতুন মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর নাগাদ মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ৮.৫০ শতাংশ। এর আগের ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮.৪০ শতাংশ, কিন্তু মে পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়েছে ৭.৮৪ শতাংশ।
দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা এবং বাজারে উদ্বৃত্ত ডলার কিনে টাকার সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে সামগ্রিকভাবে এবারের মুদ্রানীতির মূল ফোকাস থাকছে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি।