চট্টগ্রামে জোড়া খুন: সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুইজন গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রাইভেটকারে ‘ব্রাশফায়ার’ করে দুজনকে খুনের ঘটনায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, এদের মধ্যে একজন হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত এবং অপরজন মোটরসাইকেল সরবরাহকারী ও পরিকল্পনাকারী।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বিকেলে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বান্দরবান জেলার লামা থানার ইসলামপুর সন্দ্বীপপাড়া গ্রামের মো. রফিকের ছেলে মো. বেলাল (২৭) এবং ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের অলিপাড়া আসদ আলীর বাড়ির মৃত আবুল হাশেমের ছেলে মো. মানিক (২৪)।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার বেলাল ডাবল মার্ডার মিশনে সরাসরি অংশ নিয়েছে। মানিক মিশনে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল সরবরাহকারী ও পরিকল্পনাকারী।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, হত্যার ঘটনার পরপরই আসামিদের শনাক্তে আমরা তৎপরতা শুরু করি। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ ও পারিপার্শ্বিক ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বেলাল ও মানিককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, নগরীর চান্দগাঁও থানার খাজা রোডের বাদামতল এলাকা থেকে বেলালকে এবং ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেলালের কাছ থেকে ঘটনার সময় পরিহিত কাপড় জব্দ করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে নগরীর চকবাজার থানার বাকলিয়া এক্সেস রোড চন্দনপুরা অংশে প্রাইভেটকারকে ধাওয়া করে গুলি করে বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ নামে দুজনকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয় আরও দুইজন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন রাতে নতুন ব্রিজ এলাকায় অবস্থান করছিলেন চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। আগে থেকেই কয়েকটি মোটরসাইকেলে সেখানে ওঁৎ পেতে ছিল কারাবন্দী আরেক সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগীরা। প্রাইভেটকারে করে সরোয়ারসহ ৬ জন রওয়ানা দেওয়ার পরই রাজাখালী ব্রিজ এলাকা থেকে সেটিকে ধাওয়া এবং গুলি ছুঁড়তে থাকে সাজ্জাদের লোকজন। প্রাইভেটকার থেকেও চালানো হয় পাল্টা গুলি।
একপর্যায়ে বাকলিয়া এক্সেস রোডের শেষ মাথায় চন্দনপুরা সড়কের সামনে পুলিশের টহল গাড়ি দেখে প্রাইভেটকার থামায় তারা। পুলিশের সহযোগিতা চাওয়ার আগেই মুহুর্মুহু গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায় প্রাইভেটকারের পেছনের গ্লাস। গুলিতে ঘটনাস্থলেই।মৃতয়ু হয় দুইজনের, আহত হয় আরও দুইজন। সেসময় ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান সরোয়ার হোসেন বাবলা।
ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে ফেরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিন জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী কারাবন্দী ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে সারোয়ারের আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। সম্প্রতি সাজ্জাদের গ্রেপ্তার এবং রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা বেড়েছে। তাই সাজ্জাদের লোকজন সারোয়ারকে খুন করতে তাদের ওপর এ হামলা চালাতে পারে।
এদিকে এ ঘটনায় গত ১ এপ্রিল নগরীর বাকলিয়া থানায় নিহত বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না ছাড়াও আসামি করা হয়েছে মোহাম্মদ হাছান, মোবারক হোসেন ইমন, খোরশেদ, রায়হান ও বোরহানকে।