নেত্রকোণার হাওড়ে নিষিদ্ধ চায়না জালের ব্যবহার, হুমকিতে দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় হাওড় ও জলাশয়ে প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ “চায়না দুয়ারী” জালের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক মৎস্যসম্পদ ও জলজ জীববৈচিত্র্য।
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চায়না দুয়ারী একটি অতি সূক্ষ্ম ফাঁসবিশিষ্ট জাল, যা কারেন্ট জালের চেয়েও ভয়াবহ। এতে শুধু বড় মাছ নয়—মাছের ডিম, পোনা, ব্যাঙ, শামুক, কচ্ছপ, সাপসহ প্রায় সব ধরনের জলজ প্রাণী আটকা পড়ে যায়। এতে প্রাকৃতিক প্রজনন চক্র ভেঙে পড়ছে এবং হুমকির মুখে পড়ছে দেশীয় প্রজাতির টাকি, শিং, কৈ, মাগুর, বোয়াল, রুই ও কাতলার মতো মূল্যবান মাছ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাছুয়াইল বিল, কালিয়ান বিল, জালিয়া হাওড়সহ একাধিক জলাশয়ে দিনে-দুপুরে চায়না জালের অবাধ ব্যবহার চললেও প্রশাসনের নজরদারি অপ্রতুল ও অনিয়মিত। ফলে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ছে।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে কিছু চায়না জাল জব্দ করে ধ্বংস করেছি। শিগগিরই নিয়মিত ও কঠোর অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বিজয়া পাল বলেন, “চায়না দুয়ারী জাল পরিবেশগত ও অর্থনৈতিকভাবে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। এতে মাছের ডিম, পোনা পর্যন্ত ধরা পড়ে, যা পুরো প্রজনন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়।”
সচেতন মহলের মতে, দেশের জলজ পরিবেশ ও দেশীয় মাছ রক্ষায় এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, আমদানি-ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা এবং বিকল্প জীবিকা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিই হতে পারে টেকসই সমাধান।