সবুজ-হলুদে অভ্যস্ত চোখ, নেইমারদের লাল জার্সি, ব্রাজিল জুড়ে বিতর্ক

গত কয়েক বছর ধরেই ব্রাজিল ফুটবলে দুর্দশা চলছে। এর মাঝে এবার শুরু হলো জার্সি বিতর্ক। কিছুদিন আগে বিখ্যাত ফুটবল বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ফুটি হেডলাইনস’ একটি প্রতিবেদনে জানায়, আগামী বিশ্বকাপে নাকি ব্রাজিলের অ্যাওয়ে জার্সি হবে লাল রঙের!
তবে নতুন এই জার্সির একটি স্কেচ ফাঁস হওয়ার পর ব্রাজিল জুড়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে, যা ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনেও।
এর আগে ২০২৩ সালে ব্রাজিল একটি প্রীতি ম্যাচে গিনির বিপক্ষে কালো জার্সি পরে মাঠে নেমেছিল। সেটি ছিল বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। প্রস্তাবিত লাল জার্সিটি ১৯১৭ থেকে ১৯১৯ সালের মধ্যে দেশটির জাতীয় দল যে লাল জার্সি পরত, তারই আধুনিক রূপ বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই এমন পরিবর্তনকে ব্রাজিলীয় ফুটবলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে বর্তমান রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার নেতৃত্বাধীন বামপন্থী সরকার। এই সুযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর সমর্থক ও ডানপন্থি রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো জার্সির লাল রঙকে বামপন্থী রাজনৈতিক দর্শনের প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। তাদের ভাষায়, ‘আমাদের পতাকা কখনো লাল হবে না।’
জানা যায়, ব্রাজিলের ডানপন্থি সংসদ সদস্য জে ত্রোভাও এমনকি একটি বিলও প্রস্তাব করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে—ব্রাজিলকে প্রতিনিধিত্বকারী যেকোনো প্রতীক বা পোশাকে কেবল জাতীয় পতাকার রঙ—সবুজ, হলুদ, নীল এবং সাদা—ব্যবহার করা যাবে। অবশ্য কারও কারও দৃষ্টিতে এটি নিছক অপ্রয়োজনীয় ‘রঙের রাজনীতি’। ব্রাজিলের প্রথাগত জার্সিটিকেই তারা ফেরত চাইছেন।
অবশেষে চারিদকে সমালোচনা শুরু হওয়ায় মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)। এক বিবৃতিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া ডিজাইনটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নয়। এটি একটি প্রাথমিক খসড়া মাত্র। ‘নাইকি’র সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনার পরেই নতুন জার্সির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।