নির্বাচন ঘিরে বাড়তে পারে আওয়ামী কূটকৌশল, নতুন অস্থিরতার শঙ্কায় বিশ্লেষকরা

আওয়ামী লীগ শূন্য নির্বাচনি মাঠে এবার একক খেলোয়ার হবে বিএনপি। আপাত দৃষ্টিতে সরল অংক এমন মনে হলেও, আগামী নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণটা এতো সহজভাবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা। বরং তাদের অভিমত নির্বাচন ঘনিয়ে এলে অস্থিরতা ও জটিলতা বাড়তে পারে আরও। যার কারণ হবে, আওয়ামী লীগের সুযোগ সন্ধানী কৌশল ও ষড়যন্ত্র।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতাচ্যুতই হয়নি, অপাংক্তেয় নির্বাচনী দৌড়েও। এরই মধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে দলটির কার্যক্রম, স্থগিত হয়েছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন।
আলোচনা আছে ব্যালটে নৌকা প্রতীকের অনুপস্থিতি, ভোটের মাঠের সমীকরণে ফেলবে বড় প্রভাব। বলা হচ্ছে, এমন পরিস্থিতি অন্য দলের জন্যও সৃষ্টি করবে সুযোগ। বিএনপির সিনিয়র নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, নির্যাতনে অংশ না নেয়া অপেক্ষাকৃত ভালো ইমেজের আওয়ামী লীগ সদস্যরা ভিড়তে পারবেন বিএনপির বন্দরে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দোষর না, কিন্তু সমাজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি এবং রাজনৈতিকভাবে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করেনি তাদের তো বিএনপির সদস্য হতে কোনো বাধা নেই।
এদিকে অতীতের বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় ভোটারদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা রেখে এসেছে। পরিবর্তিত বাস্তবতা নতুন সমীকরণের মুখোমুখি করবে তাদের এমন কথা বলছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম।
আব্দুল আলীম বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে, সেহেতু তার আর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নাই। বাংলাদেশে যে ভোটের ইতিহাস, তাতে প্রত্যেক বড় বড় রাজনৈতিক দলের একটা রিজার্ভ ভোট আছে। আওয়ামী লীগেরও একটা রিজার্ভ ভোট আছে, যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না থাকে তাহলে এ ভোটগুলো ভাগ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলেও, সম্পূর্ণ নিষ্দ্ধি করা হয়নি। ফলে তারা তলে তলে কোনো একটা গোষ্টির সঙ্গে আঁতাত করতে পারে এবং একাধিক ঘোষ্টির সঙ্গেও আঁতাত করতে পারে। আমি অবাক হবো না তারা যদি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও আঁতাত করে। কারণ অতীতে এমন রেকর্ডও আছে।
তবে নির্বাচনে না থাকলেও সহিংতার মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং অস্থিতিশীলতায় ইন্ধন যোগাতে, রাজপথে আওয়ামী লীগ তৎপর থাকবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ। তার মতে, এসবের নমুনা এরই মধ্যে দৃশ্যমান।
প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমাদের রাজনীতিতে জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করবে। কারণ তারা আগাত করবে আবার পালিয়ে যাবে, আবার আগাত করবে আবার পালিয়ে যাবে। সরাসরি মোকাবেলা তারা করবে না। এইভাবে তারা চাইবে প্রচলিত রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থাকে দুর্বল করার জন্য। এবং অন্যান্য দলগুলোকেও কোণঠাসা করার জন্য।
আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজপথে দলটিকে মোকাবেলার রাজনৈতিক কৌশল কি হয় তা সময়ই বলে দেবে।