লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে উচ্ছ্বসিত মির্জা ফখরুল

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকে বিএনপি অনুপ্রাণিত ও আশ্বস্ত বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, বৈঠকে দুজনে কতগুলো বিষয়ে একমত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে এটি অত্যন্ত আশার বাণী। আমরা আশা রাখছি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
শনিবার (২১ জুন) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ শীর্ষ সংগঠন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পুনর্মিলনী’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভালো কাজ করছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিঃসন্দেহে তারা ইতোমধ্যে অনেক কাজ করেছেন এবং ভালো কাজ করছেন, আমাদেরকে পথ দেখাচ্ছেন। আমরা আশা করব, যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম সবাই মিলে তাদের সহযোগিতা করব।
তিনি বলেন, আমাদের সংগ্রাম, জনগণের সংগ্রাম বলতে পারি; প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। জনগণকে আমরা স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছি, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করব। জনগণের কাছে আমাদের এটাই ছিল প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি পালনে আমরা কাজ করে যাব। রাষ্ট্রকাঠামোতে জনগণের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়, তাই আমরা ৩১ দফা দিয়েছি সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে। যাতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১০ মাসে বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে আমরা একটু সন্দিহান হয়ে পড়েছিলাম যে শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়াবে। আমরা অত্যন্ত অনুপ্রাণিত হয়েছি, আশ্বস্ত হয়েছি। যখন আমরা দেখলাম, এ আন্দোলনের প্রধান দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস একটা সভা করলেন। সভায় তারা কতগুলো বিষয়ে একমত হলেন। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে আশা সামনে এনে দিয়েছে। আশা রাখছি, সামনের ফেব্রুয়ারি মাসে একটা নির্বাচন হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের আশাগুলো পূরণের সুযোগ হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন সংস্কার কাজ এগিয়ে চলেছে, কতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, কতগুলো বিষয়ে একমত হচ্ছে না। যতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হব সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব। আর যেগুলোতে একমত হওয়া যাচ্ছে না, সেগুলো নিয়ে নির্বাচনের পরে আলোচনা করব। সেগুলোতে আমরা একমত হব। শুধু কথা বা আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের এ বিশাল কাজ সম্ভব হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আগামীকাল (রোববার) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের জমার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রত্যাশা তাদের প্রতি অনেক বেশি, আমরা প্রত্যাশা করি এই তরুণেরা, যারা বিগত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, যাদের সহকর্মীরা, কমরেডরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি তাদের নেতৃত্ব আমাদেরকে লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, গণফোরমের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ উদ্দিন স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।