দলে শুদ্ধি অভিযান: বাস্তবে শাস্তি নাকি প্রহসন?

দলের নাম ব্যবহার করে দখল, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ নতুন নয়। বিএনপি এবং সদ্য গঠিত এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়মিতভাবে এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বললেও, বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এ পর্যন্ত সংগঠনটির প্রায় ৩২০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, শাস্তি হিসেবে যাদের বহিষ্কার করা হয়, তারা অল্প সময়ের মধ্যেই আবার দলে ফিরছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের নজিরও রয়েছে।
এমনকি ধর্ষণ, মারধর, থানায় হামলার মতো গুরুতর অভিযোগেও কেবল কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েই থেমে যাচ্ছে অনেক রাজনৈতিক দল। এনসিপির ক্ষেত্রেও একই চিত্র—শুধু শোকজ, কোনো স্থায়ী বহিষ্কার নয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েও দলে ফেরানো হয়, সেটা শুদ্ধি অভিযানের প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আর দলের স্বার্থে শাস্তির চেয়ে আপসই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে—এমন অভিযোগ দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান বলেন, “শাস্তির নামে এইসব ব্যবস্থা কার্যত আইওয়াশে পরিণত হচ্ছে। সংগঠনের অভ্যন্তরে ক্ষমতার খেলা ও পক্ষপাতের কারণে প্রকৃত অপরাধীরা দণ্ডিত না হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।”
নতুন দল এনসিপিও একই চ্যালেঞ্জের মুখে। নিজেদের শৃঙ্খলাবিধি কার্যকর করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে দলটির বিরুদ্ধেও।
সবমিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—এই তথাকথিত শুদ্ধি অভিযান আসলে দলের ভাবমূর্তি রক্ষার কৌশল, নাকি বাস্তব পরিবর্তনের আন্তরিক উদ্যোগ?