সারা দেশে বেড়েছে হত্যা, ডাকাতি ও ছিনতাই, পুলিশের দাবি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে

সারা দেশে হত্যা, দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে খুনের মামলা হয়েছে ১,৯৩১টি, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৯১টি বেশি। ছিনতাই মামলার সংখ্যা ৯৭২ এবং ডাকাতির সংখ্যা ৩৬৭, যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার দাবি করেছেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দাবির সঙ্গে বাস্তব চিত্রের মিল নেই।
সম্প্রতি পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে যুবদল নেতা লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮ জন গ্রেফতার হলেও ডজনখানেক অপরাধী এখনও গ্রেপ্তার থেকে বঞ্চিত।
মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পার হলেও এলাকায় বিরাজ করছে চাপা আতঙ্ক, স্থানীয়রা নিরাপত্তার অভাবে মুখ খুলতে পারছেন না। অপরদিকে, গত ১১ জুলাই ভোরে রাজধানীর পল্লবীতে ২০-৩০ জন দুর্বৃত্ত আক্রমণ চালিয়ে গুলি ছোড়ে, যার ফলে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ কে বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম খান দাবি করেছেন, সন্ত্রাসী জামিল ও মশিউর ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিল এবং তা না পেয়ে হামলা চালিয়েছে।
একই দিনে শ্যামলীর ২ নম্বর সড়কে ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেলে এসে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীর কাছ থেকে চাপাতি দেখিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়, এমনকি তাঁর পরনে থাকা টিশার্ট ও জুতোও ছিনিয়ে নেয়া হয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অপরাধ প্রবণতার শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ, তারপরে চট্টগ্রাম ও রাজধানী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান দাবি করেছেন, পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, পুলিশের নিয়মিত অভিযান ও তৎপরতার কারণে অপরাধের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
তবে অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশের দাবির সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে, বিশেষ করে অপরাধ প্রবণ এলাকাগুলোতে। সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে সমন্বিতভাবে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।