প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য: জ্যেষ্ঠতম বিচারকই হবেন পরবর্তী প্রধান বিচারপতি

আপিল বিভাগের বিচারকদের মধ্য থেকে কর্মে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। তবে দলীয় ইশতেহারে যদি কোনো দল জ্যেষ্ঠতম দুই বিচারকের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং নির্বাচনে জয়ী হয়, তাহলে তারা সে অনুযায়ী নিয়োগ দিতে পারবে—এই বিধানও যুক্ত করার ব্যাপারে একমত হয়েছে সবাই। রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনে এ ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তনে সম্মত হয়েছে দলগুলো। এখন থেকে রাষ্ট্রপতি, আপিল বিভাগের বিচারকদের মধ্যে কর্মে জ্যেষ্ঠতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করবেন। তবে তার বিরুদ্ধে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো অসদাচরণ বা অযোগ্যতার তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান থাকলে, সে ক্ষেত্রে ভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।
সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন দল অংশ নেয়। জামায়াতসহ কয়েকটি দল সরাসরি জ্যেষ্ঠতম বিচারককে নিয়োগের পক্ষে মত দিলেও বিএনপি এবং আরও ছয়টি দল দুই জ্যেষ্ঠ বিচারকের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগের সুযোগ রাখার পক্ষে মত দেয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা সম্মত হচ্ছি যে, জ্যেষ্ঠতম বিচারককেই নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে—জ্যেষ্ঠতম দুই বিচারকের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।”
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, “আমরা চাই আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারকই হবেন প্রধান বিচারপতি। তবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটলে আমরা সুপারসিড পদ্ধতিও মেনে নিতে রাজি।”
শেষে কমিশনের পক্ষ থেকে ঐকমত্যের ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বলা হয়—কর্মে জ্যেষ্ঠ বিচারককে নিয়োগ দিতে হবে যদি না তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ বা অযোগ্যতার কোনো প্রক্রিয়া চলমান থাকে। এতে দেশের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলো।