শেখ হাসিনা ইস্যুতে ভারতকে নৈতিক অবস্থান গ্রহণের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে ভারতকে বিবেক ও নৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল বুধবার (৯ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে শফিকুল আলম বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধে বিশ্বাসযোগ্যভাবে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তিকে আর রক্ষা করার সুযোগ ভারতের নেই। আমরা ভারতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন বিবেক ও নৈতিক স্পষ্টতা নিয়ে কাজ করে।”
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের বিষয়ে ভারতের প্রতি আইনগত অনুরোধ জানিয়ে আসছে, তবে ভারত তা উপেক্ষা করে আসছে। “এ অবস্থান আর গ্রহণযোগ্য নয়,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আঞ্চলিক বন্ধুত্ব, কৌশলগত হিসাব কিংবা রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের কারণ দেখিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই বৈধতা দেওয়া যায় না।”
বিবিসি অনুসন্ধনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন...
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “যখন বিবিসির মতো একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ উদঘাটনে তাদের পূর্ণ তদন্ত সক্ষমতা কাজে লাগায়, তখন বিশ্বকে তা আমলে নিতেই হয়।”
তিনি দাবি করেন, বিবিসির ইনভেস্টিগেশন ইউনিট তাদের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে শেখ হাসিনার সরাসরি সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করেছে। অনুসন্ধানে প্রকাশিত অডিও রেকর্ডিং ও ভিডিও ফুটেজ ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভ দমন অভিযানে শেখ হাসিনার ভূমিকার ‘চূড়ান্ত সত্য’ প্রকাশ করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম বলেন, “ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং—যা বিশ্বমানের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যাচাই করেছেন—প্রমাণ করে যে সহিংসতা ছিল না তাৎক্ষণিক বা দুর্ঘটনাবশত। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড।”
তিনি আরও বলেন, “এখন আর প্রমাণ শুধু গল্পনির্ভর নয় কিংবা পক্ষপাতদুষ্ট নয়। এটি ফরেনসিক, যাচাইযোগ্য এবং উপেক্ষা করার মতো নয়।”
ভারতের প্রতি আহ্বান
প্রেস সচিব বলেন, “যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুসন্ধানে উন্মোচিত এসব বর্বরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের মতো বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশকে এখন দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই ভারত এই মুহূর্তের গুরুত্ব অনুধাবন করুক এবং ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখাক।”
বিবৃতির শেষাংশে প্রেস সচিব বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার দাবি করে, আর ভুক্তভোগীরা প্রত্যাশা করে বিচারিক সমাপ্তি। বিশ্বকে এখন দেখাতে হবে, কোনো নেতা তিনি যতই ক্ষমতাশালী হোন না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে নন।”