উদ্বোধনের অপেক্ষায় ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’

আসছে ৫ আগস্ট ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর'-এর উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাদুঘরটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন চলছে স্মারক ও ঐতিহাসিক উপকরণ সংগ্রহের কাজ।
জাদুঘরটিতে স্থান পাচ্ছে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময়কার স্থিরচিত্র, শহীদদের ব্যবহার করা জামাকাপড়, ব্যক্তিগত চিঠি, পত্রিকা কাটিং, অডিও-ভিডিও দলিল এবং সেই সময়ের নানা ঐতিহাসিক স্মারক। বিশেষভাবে প্রদর্শিত হবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়নের সময়কার দৃশ্য ও প্রাসঙ্গিক উপকরণ।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অংশ হিসেবে গড়ে তোলা এই স্মৃতি জাদুঘরটি সরাসরি তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে। জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম জানিয়েছেন, “প্রধান উপদেষ্টা সশরীরে উপস্থিত থেকে জাদুঘরের উদ্বোধন করবেন, এমনটাই আমাদের প্রস্তুতির অংশ।”
সাবেক গণভবনে জাদুঘর
রাজধানীর মিরপুর রোডসংলগ্ন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন ‘গণভবন’ কেই রূপান্তর করা হচ্ছে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’-এ।
২০২3 সালের ৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের পঞ্চম সভায় গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে জাতির পিতার পরিবারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন বাতিল হওয়ায় শেখ হাসিনার পরিবারের গণভবনে থাকার অধিকার রহিত হয়।
সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ জাদুঘর যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করে নির্ধারিত দিনে উদ্বোধনের লক্ষ্যে কাজ চলছে।
জনতার মিছিল ও গণভবন
গত বছরের ঐতিহাসিক ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও পলায়নের পর ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার মিছিল ঢুকে পড়ে গণভবনে। ভাঙচুর হওয়া স্থানগুলো আগের অবস্থায় রেখে ইতিহাসের সাক্ষ্য হিসেবে সংরক্ষিত করা হয়েছে।
এখন গণভবন ক্যাম্পাসে চলছে সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ। প্রবেশের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি ছাড়া এখনো কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
সংগ্রহ অভিযান ও স্মৃতি সংরক্ষণ
জাদুঘরের জন্য দেশজুড়ে আর্কাইভ ও কালেকশন টিম স্মারক সংগ্রহে নিয়োজিত। সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে স্মৃতি ও উপকরণ আহ্বান জানাতে বিজ্ঞাপন প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
লক্ষ্য একটাই—ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গৌরবগাথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করা।
সবুজ ক্যাম্পাসে ইতিহাসের পাঠ
পুরো জাদুঘর ক্যাম্পাসটি প্রায় ১৭.৬৮ একর বা ৫৩ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক লন, পুকুর, ফলের বাগান ও খেত। রাজধানীর হৃদয়ে অবস্থিত এই স্থাপনাটি নগরবাসীর জন্য হয়ে উঠবে একটি ইতিহাস-ভিত্তিক সুস্থ বিনোদনের স্থান।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
উদ্বোধন: ৫ আগস্ট ২০২৫
অবস্থান: সাবেক গণভবন, মিরপুর রোড, ঢাকা
উদ্যোগ: বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
মূল পরিকল্পনা: গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণ ও প্রচার