হাঁটা শুরু করতে চান? কখন, কতক্ষণ, কীভাবে হাঁটবেন

হাঁটা একটি ভালো ব্যায়াম, এটা মোটামুটি সবার জানা। এ সম্পর্কে অনেক ধরনের গবেষণা হয়েছে। কতক্ষণ হাঁটলে, কীভাবে হাঁটলে, কী রকম পদক্ষেপে বা কত জোরে হাঁটলে উপকার মেলে, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে। এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক।
যদি হাঁটা শুরু করতে চান, তাহলে শুরুতে ধীরে হাঁটুন। কম সময় ধরে হাঁটুন। এরপর গতি বাড়ান। আরেকটু বেশি সময় ধরে হাঁটুন।
সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটা উচিত। প্রথম ১০ মিনিট ধীরগতিতে হাঁটবেন, যাকে বলে ওয়ার্মআপ বা গা গরম করা। এর পরের ১০ মিনিট দ্রুত হাঁটবেন। এ সময় নাড়ির গতি যেন স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় দ্বিগুণ হয়। ঘাম হলে, হৃৎস্পন্দন বাড়লে, শ্বাসপ্রশ্বাস বাড়লে ব্যায়াম ঠিকমতো হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। এরপর শেষ ১০ মিনিট আবার ধীরগতিতে হেঁটে ব্যায়াম শেষ করতে পারেন।
৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটলে ক্যালরি বার্ন হয়ে ওজন কমতে সাহায্য করে। এটি হৃদ্রোগ ও ফুসফুসের জন্য ভালো। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। টাইপ–২ ডায়াবেটিস ও ক্যানসার প্রতিরোধের সহায়ক। উচ্চ রক্তচাপ আছে যাঁদের, তাঁরাও উপকার পাবেন।
নিয়মিত ধীরে হাঁটা হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য ভালো। এটা দুশ্চিন্তা কমাতে ও স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
হাঁটায় ওজন কমে। চর্বি কমে। তবে পেটের চর্বি কমাতে চাইলে আলাদা কিছু ব্যায়াম করতে হয়।
কখন হাঁটবেন
সূর্যোদয়ের আগে হাঁটলে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে হাঁটলে সেটিও যথেষ্ট প্রশান্তিদায়ক। ভোরবেলা সম্ভব না হলে সকাল ৮টা থেকে ১০টায় হাঁটতে পারেন। এটি হজমে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
বিকেলে বা ঘুমানোর আগে হাঁটলে ওজন কমে, দুশ্চিন্তা কমে ও ঘুম ভালো হয়।
কাদের সতর্ক থাকা উচিত
হার্ট ফেইলিউরের রোগী, যাঁদের হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে নেই, তীব্র রক্তশূন্যতায় ভুগছেন, কোনো কারণে মাথা ঘুরায়, তাঁদের হাঁটার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হাঁপানির রোগীদের হাঁটার আগে দুই চাপ ইনহেলার নিয়ে নিতে বলা হয়। ডায়াবেটিক রোগীরা দুটি বিস্কুট বা সামান্য ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে হাঁটতে গেলে রক্তে সুগার কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। যাঁদের পক্ষে একটানা ৩০ মিনিট হাঁটা সম্ভব নয়, তারা মাইক্রো ওয়াকিং করতে পারেন। অর্থাৎ সারা দিনে কয়েকবার ৫-১০ মিনিট হাঁটুন।
খুব বেশি হাঁটার ফলে কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। বিষণ্নতা হতে পারে। খিটখিটে মেজাজ, নাড়ির গতি বাড়া, অরুচি, ওজন বেশি কমে যাওয়া, ক্লান্তি, অবসাদ, মাংসপেশিতে ব্যথা—এসবও হতে পারে।
