আলাস্কায় ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক: লাভবান পুতিন, অনিশ্চয়তায় ইউক্রেন

আলাস্কায় শেষ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বহুল আলোচিত বৈঠক। বহু জল্পনা থাকলেও এ বৈঠক থেকে কোনো দৃঢ় চুক্তি হয়নি। ফলে ইউক্রেন অন্তত বড় কোনো তাৎক্ষণিক সমঝোতা বা আপসের মুখোমুখি হয়নি।
তবে রাজনৈতিক প্রাপ্তিতে এগিয়ে পুতিন। বৈঠকে তিনি যুদ্ধের মূল কারণ নিয়ে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন, কিন্তু কোনো নমনীয়তা দেখাননি। বরং কিয়েভ ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি হুমকির সুরে সতর্ক করেছেন, চলমান প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়ে।
ট্রাম্পকে বৈঠকে ক্লান্ত ও বিরক্ত দেখা যায়। কিয়েভ ও ন্যাটোকে নিয়ে তার আহ্বানকে পুতিন “চুক্তি” বলে আখ্যা দিলেও ট্রাম্পের অভিব্যক্তি ও বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল—তিনি একে কার্যকর কোনো সমঝোতা মনে করছেন না। দুই নেতা একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও করেননি, বৈঠক শেষে পুতিন দ্রুত দেশে ফিরে গেছেন।
পুতিনের দুটি বড় অর্জন
১. কূটনৈতিক স্বীকৃতি: যুক্তরাষ্ট্রে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ গাড়ি ‘দ্য বিস্ট’-এ চড়ার সুযোগ পান পুতিন। অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীর জন্য এটি ছিল ভাবমূর্তি পুনর্বাসনের বিরল সুযোগ, যা ইউক্রেনীয়দের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক দৃশ্য।
২. সময় অর্জন: আলোচনার মাধ্যমে পুতিন ফ্রন্টলাইনে সেনাদের অগ্রসর হওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় পেলেন। ট্রাম্প শিগগিরই নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবেন কি না, তা এখনো অনিশ্চিত।
অমীমাংসিত প্রশ্ন
আলোচনায় সবচেয়ে জটিল বিষয়গুলোই রয়ে গেছে অমীমাংসিত—যেমন যুদ্ধবিরতি কিংবা রাশিয়ার দখলকৃত ভূখণ্ড নিয়ে সিদ্ধান্ত। ট্রাম্পের বক্তব্যে ইঙ্গিত মেলে, বড় কোনো সমাধান হয়নি।
সামনে কী?
পুতিন নতুন বৈঠকের ইঙ্গিত দিয়েছেন, অর্থাৎ তিনি তাড়াহুড়ো করছেন না। গ্রীষ্মকালীন আক্রমণের ধীর অগ্রগতিকে কৌশলগত সাফল্যে রূপ দিতে সময় তার পক্ষে কাজ
করছে।
সবশেষে, ইউক্রেন ঘুম থেকে জেগে দেখছে—পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। ভয়াবহ যুদ্ধ বাস্তবতা আগের মতোই রয়ে গেছে, তবে অন্তত আপাতত কোনো মার্কিন-রুশ গোপন সমঝোতা হয়নি।