ইরান ইস্যুতে এখনও কূটনীতিতে আগ্রহী ট্রাম্প: হোয়াইট হাউস

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে একইসঙ্গে দেশটির সরকার শান্তিপূর্ণ আলোচনায় না এলে ‘সহিংস শাসনব্যবস্থা উৎখাত’ করার আহ্বানও জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট।
সোমবার (২৩ জুন) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে লেভিট বলেন, “ইরানি শাসকগোষ্ঠী যদি কূটনীতির পথ না বেছে নেয়, তাহলে দেশের জনগণের উচিত হবে এই সহিংস সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া, যারা বহু বছর ধরে জনগণকে দমন করে আসছে।” তিনি জানান, “এই প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগ্রহী ও সম্পৃক্ত।”
এই বক্তব্যের ঠিক একদিন আগেই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, “ইরানে সাম্প্রতিক মার্কিন হামলা শাসন পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে নয়।” কিন্তু তার বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন—
“যদি বর্তমান ইরানি সরকার ইরানকে আবার মহান করতে না পারে, তাহলে শাসন পরিবর্তন কেন হবে না???”
বিশ্লেষকরা বলছেন, হোয়াইট হাউসের এ বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলছে যে ট্রাম্প প্রশাসন একইসঙ্গে কূটনীতি ও চাপ প্রয়োগের নীতিকে সামনে রেখে এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান যেন পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন থেকে বিরত থাকে, কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনে আলোচনার পথ খোলা রাখার পাশাপাশি সরকারের ওপর সরাসরি চাপও তৈরি করছে।
এর আগে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান পারমাণবিক চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে সরিয়ে নেন এবং পুনরায় ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর জেরে ইরান ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। পরবর্তীতে বারবার আলোচনার কথা বললেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প আবার নির্বাচনী প্রচারে কঠোর পররাষ্ট্রনীতি দেখাতে চাচ্ছেন, সেইসঙ্গে বিশ্বের কাছে আবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের বার্তা দিতেও চাইছেন। আর ইরান—তার সেই বার্তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।
তবে ইরানি পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের সর্বশেষ বক্তব্যে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং আঞ্চলিক সংঘাতে এই অবস্থান নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।