বাংলাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে : আমীর খসরু

বাংলাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে এবং কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের পথ কেউ যাতে রুদ্ধ করতে না পারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে তারুণ্যের সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘আজকে এখানে তামিমকে দেখে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে চট্টগ্রামের তরুণরা আজকে ছক্কা মেরে দিয়েছে। এ-ই তরুণরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা হঠানোর মূল শক্তি। ওয়াসিম আকরামের জীবন দিয়ে এ আন্দোলন সফল করেছে। সেদিন ছাত্রদল যুবদল বুক পেতে দিয়েছে গুলির সামনে। গণতন্ত্র, মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তরুণরা লড়াই করেছে, সব অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করেছে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা ১৬-১৮ বছর আন্দোলন করেছি। মামলা, হামলা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছি। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে অনেক নেতাকর্মীর। আমাদের নেতাকর্মীরা যার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেই গণতন্ত্র যেন কেউ জিম্মি করতে না পারে। এ রকম একটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
আমির খসরু বলেন, ‘কারো যদি দর্শন থাকে, ভাবনা থাকে, কর্মসূচি থাকে তাহলে তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে। কিন্তু কারো স্বার্থের জন্য দেশকে জিম্মি করা যাবে না। মানুষের মধ্যে নতুন যে ভাবনা এসেছে তা বুঝতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে সে আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কথা শুনি, ৩১ দফার মধ্যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কথা অনেক আগে বলেছে বিএনপি। খালেদা জিয়া বলেছেন, তারেক রহমান বলেছেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘কোনো দল তো সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জনগণের কাছে যেতে দেখিনি। আমরা কেন যাচ্ছি, আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটের জন্য, জনগণ ভোট দিলে আগামীতে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার গঠন করলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এখানে কোন কিছু অস্পষ্ট নেই, দিনের আলোর মতো পরিস্কার।’
খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু হয়েছে, এটা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। গণতন্ত্রের পথে কেউ যাতে রুদ্ধ করতে না পারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা শান্তি পূর্ণ ভাবে এগিয়ে যাবো, কারো উস্কানিতে পা দেওয়া যাবে না। এটা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত। আমরা নতুন সংস্কৃতি সৃস্টি করতে চাই, সহনশীল থাকতে হবে সবাইকে।’
এর আগে সমাবেশে উপস্থিত হয় বক্তব্য দেন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, ‘আমি পলিটিক্যাল কেউ না। আমি একজন স্পোর্টসম্যান। তাই আমি স্পোর্টস নিয়ে কিছু কথা বলবো। একসময় মানে চট্টগ্রাম থেকে ৫-৬ জন করে ন্যাশনাল টিমে প্রডিউস করতো। কিন্তু লাস্ট ১০-১৫ বছর আগে সেরকম প্লেয়ার উঠে আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাইবো, আগামীতে যেন উঠে আসে। এজন্য কার জন্য কি প্রতিবন্ধকতা হয়েছে তা নয়। আমরা কেন ন্যাশনাল টিমে যেতে পারিনি তা দেখতে হবে। আর কি করলে আমরা স্পোর্টসে আরও অংশগ্রহণ করতে পারবো, অবদান রাখতে পারবো তা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
এইদিন সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্র-শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সমর্থক ভিড় করছেন। কেউ হেঁটে, কেউ বাসে আর কেউ ট্রাকে করে আসছেন। কেউ আবার ঢাক-ঢোলের তালে তালে। তাদের অনেকে সরাসরি পলোগ্রাউন্ডের দিকে চলে গেলেও কিছু টাইগারপাস মোড়ে জড়ো হচ্ছেন। বড় আকারের মিছিল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তারা টাইগারপাসে এক হচ্ছেন বলে জানান নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে আরও উপস্থিত আছেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিম প্রমুখ।
