রাবি ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী-অভিভাবক সেবায় সামাজিক ও ছাত্রসংগঠনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনগুলো। তাদের এই কাজ প্রশংসা কুড়াচ্ছেন বিভিন্ন মহলে ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন জায়গায় তাদের সেবামূলক বুথ বসিয়েছেন। বুথগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে পানি, কলম, চকলেট, ফুল বিতরণ করতে দেখা গিয়েছে। তাছাড়াও শিক্ষার্থীদের ব্যাগ টোকেনের মাধ্যমে সংগ্রহ করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাথে আগত অভিভাবকদের বসার ব্যাবস্থাও করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাঙ্গণে শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ৭টি সেবামূলক বুথ বসিয়েছেন। এবিষয়ে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য সাতটি হেল্প ডেক্স বসানো হয়েছে । এর মধ্যে আমাদের ফ্রি বাইক সেবা, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র , ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রনের জন্য একটি টিম , অভিভাবকদের বসার জায়গা , সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং পত্রিকা পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সেবায় শাখা ছাত্রশিবির বিভিন্ন উপাহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন। শাখা ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক হাফেজ মেহেদী হাসান বলেন , বিভিন্ন জেলা থেকে যে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা আসছে তাদের জন্য আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে, বিজনেস ফ্যাকাল্টির সামনে ও জগদীশচন্দ্র বসুর সামনে মোট ৩টা বুথ রেখেছি যেন তারা সে জায়গায় বিশ্রাম নিতে পারে। অভিভাবকদের জন্য বিস্কুট, পানি ইত্যাদির ব্যআবস্থা করেছি। এবং তারা যেন বোরিং ফিল না করে সেজন্য বুক কর্নার করেছি তার পাশাপাশি রাজশাহীর এ গরম থেকে বাঁচার জন্য আমরা স্যালাইন, গ্লুকোজ রেখেছি।
এছাড়াও ভর্তি- ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য বাইক রাইডের ব্যবস্থা করেছি। বাইকের মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন কেন্দ্রে পৌঁছায় দেওয়া হচ্ছে । প্রত্যেকটা পয়েন্টে পয়েন্টে আমাদের ভলেন্টিয়ার ভাইদের কে রেখেছে যেন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সমস্যা না হয়।
বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সাদিক আহমদ বলেন , গত ৫ই আগস্ট এর আগে আমরা কোন হেল্পডেস্ক করতে পারি নি,তখন লক্ষ্য করেছি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করতো কিন্তু আজকে দেখতে পেলাম সব সংগঠন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করছে, সবাই আসবাবপত্র বা অন্য কিছু আমানতদার হিসেবে রাখতে পারছে যা বিগত ছাত্রলীগ বা অন্যদের বেলায় সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ও সেবামূলক সামাজিক সংগঠনগুলো একযোগে শিক্ষার্থীদের সেবায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে কাজ করতে আসা সঞ্জয় কুমার বলেন, এটি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমরা এইবার ১৫০ জনের দল এসেছি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য, এর পাশাপাশি মেডিকেল সার্ভিস, এম্বুলেন্স সার্ভিস,হুইলচেয়ার,তার পাশাপাশি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ময়লা অদাহ্য পদার্থ,পলিথিন সেগুলোকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার চেষ্টা করছি।গত পরিক্ষাতেও আমাদের এই কর্মসূচি ছিল,যা সামনের পরিক্ষাও চলমান থাকবে।
এদিকে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিব বলেন, শিক্ষার্থীদের সেবায় আমরা রবীন্দ্র ভবনের পাশে একটা বুথ বসিয়েছি। কোনো শিক্ষার্থীর ভবন চিনতে সমস্যা হলে তাদেরকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাছাড়াও কেউ অসুস্থ হলে তালে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক মেহেদী মারুফ বলেন, আজকের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আমরা এখানে বুথ বসিয়েছি। আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য কলম ও অভিভাবকদের বসার ব্যাবস্থা করেছি। তাছাড়া কোনো শিক্ষার্থী যদি কোনো সমস্যা যেমন প্রবেশপত্র আনতে ভুলে গেলে এবং যাতায়াতে কোনো সমস্যা হলে আমরা যতটুকু সম্ভব তাদের সেবা করে যাচ্ছি।
সংগঠনগুলোর এই সেবামূলক কাজকে প্রশংসা করে চাপাইনবয়াবগঞ্জ থেকে আসা পরীক্ষার্থী সাইফুল্লাহ নাহিদ বলেন, আমাদের এই কাজগুলো খুবই পছন্দ হয়েছে। সবাই আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে।প্রতিবছর এই কাজগুলো চলমান থাকুক।
আজ সকালে পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিং এ উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব তাদের এই কাজকে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন , আমরা অকপটে বলতে চাই এটা একটি নতুন ধারা, এখানে হই হট্টগোল বিশৃঙ্খলা না করে তারা যদি এই ধরনের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক বান্ধব কাজে নিজেদেরকে জড়ান তাহলে সেটা দেশের জন্য ভালো এবং ইনস্টিটিউশন এর জন্য ভালো । ভালো কাজ করতে হবে ভালো কাজে কোন বাধা নেই।
