প্রতিষ্ঠার পর প্রথম জকসু নির্বাচন মঙ্গলবার
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ভোট শুরুর আগে নির্বাচনি কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত। ডিজিটাল ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করা হবে।
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া, ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ক্যাম্পাসে সহনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করবেন এমন নেতৃত্ব চান তারা।
ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলাম, আগামীতেও থাকব। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে একটি ভালো নির্বাচন হবে।
ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের অন্যান্য ক্যাম্পাসগুলোতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেভাবে শিবিরের ওপর আস্থা রেখেছেন, জকসুতেও একইভাবে আস্থা রাখবে বলে তারা আশাবাদী।
তবে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রশক্তি সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান প্যানেলের ভিপি প্রার্থী কিশোয়ার সাম্য। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্রেফ নামমাত্র কমিশন। এই কমিশন একটি আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনার সুরাহা করতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান থাকবে— আপনারা জুলুমের বিরুদ্ধে ভোট দিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র পদে ৪ জন, শিক্ষা ও গবেষণা পদে ৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৫ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৫ জন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে ৪ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ৮ জন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ৭ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৭ জন, পরিবহন সম্পাদক পদে ৪ জন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১০ জন, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ৭ জন এবং সদস্য পদে ৭ জনের বিপরীতে ৫৭ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
ছাত্রী হলে ১৩ পদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৩ জন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২ জন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ২ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ৪ জন, পাঠাগার সম্পাদক পদে ২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ২ জন, সমাজ সেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে ৩ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৪ জন এবং ৪টি সদস্য পদের বিপরীতে ৮ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. জুলফিকার মাহমুদ বলেন, আমাদের নির্বাচন সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনি কাজে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রই জকসু নির্বাচনকে বানচাল করতে পারবে না, জকসু নির্বাচন হবেই। নিরাপত্তার বিষয়াদি নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে আমার কাছে কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। সার্বিকভাবে জকসু নির্বাচন নিয়ে আমি আশাবাদী; অত্যন্ত সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।