কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের মেয়ের পোষ্য কোটায় ভর্তি নিয়ে বিতর্ক: কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা?

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলীর মেয়ে। ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটে তিনি পেয়েছেন ৪৬.২৫ নম্বর (১০০-এর মধ্যে)। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে—তোলা হচ্ছে নৈতিকতা ও নীতিমালা সংক্রান্ত প্রশ্নও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো স্পষ্ট পোষ্য কোটা নীতিমালা না থাকায় অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—উপাচার্য কীভাবে "পোষ্য" হিসেবে বিবেচিত হলেন, এবং এত কম নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও এই বিভাগে ভর্তির সুযোগ কীভাবে পাওয়া গেল?
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, উপাচার্য সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বেতন-ভাতা ভোগ করছেন বিধায় তাকেও পোষ্য কোটার আওতায় ধরা হয়েছে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই।
সিএসই বিভাগের প্রধান ড. মাহমুদুল হাসান বলেন, “সব নিয়ম মেনেই ভর্তি হয়েছে। ডিন অফিস থেকে পাওয়া কাগজপত্র অনুযায়ী ভর্তি হয়েছে।”
‘এ’ ইউনিটের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ড. প্রদীপ দেবনাথ জানান, “পোষ্য কোটা বিষয়ে একটি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত ছিল, তবে উপাচার্য বা বাইরের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোটার আওতায় পড়েন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নই।”
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ড. তানজিম খান বলেন, “পোষ্য কোটা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য। তবে নিজস্ব নীতিমালা না থাকলে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ধরা হয়।”
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেছেন, “আমার মেয়ে মেধাতালিকা অনুযায়ী ও নিয়ম মেনে ভর্তি হয়েছে। আমি নিজে কোনো হস্তক্ষেপ করিনি, এবং উপাচার্য দপ্তর থেকেও কোনো অফিস আদেশ দেওয়া হয়নি।”
সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, ৪৬.২৫ নম্বর পেয়ে এমন প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাওয়া একটি নৈতিক প্রশ্ন তৈরি করছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, পোষ্য কোটার সুযোগ নেয়ার মাধ্যমে উপাচার্য নৈতিক স্বচ্ছতা হারিয়েছেন—এমন বিতর্কও চলছে।
উপাচার্যের মেয়ে ৪৬.২৫ নম্বর পেয়ে সিএসই বিভাগে ভর্তি হয়েছেন পোষ্য কোটায়।
পোষ্য কোটার নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
উপাচার্য দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো অফিস আদেশ দেওয়া হয়নি।
বিতর্ক উঠেছে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে।