কেউ পায়নি বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা, বহু মানুষের হয়নি ঈদ বাজার নতুন কাপড়!

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বিধবা ও প্রতিবন্ধী সরকারি ভাতাভোগীদের কাউকেই দেওয়া হয় নি ভাতার টাকা। ফলে প্রায় ৮ হাজার টি পরিবারের ঈদের আনন্দ সরাসরি বঞ্চিত। সরকারি ভাতাভোগীদের অধিকাংশরা মূলত ওই ভাতার টাকার উপর নির্ভরশীল। এদের মধ্যে যারা ভাতা পান তারা হলেন, স্বামী পরিত্যক্তা, কারো স্বামী মারা গেছেন, বৃদ্ধা, আর শারীরিকভাবে অক্ষম প্রতিবন্ধীরা রয়েছেন। ঈদের আগে ভাতার টাকা না পাওয়ায় কষ্টে কেটেছে তাদের আনন্দের ঈদ। উপজেলাটিতে বিধবা ভাতাভোগীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৮ শত ৪৪ জন আর প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩ জনের মতো।
যেসব বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ভাতা পেতেন তাদের বাসায় গিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে অন্যরকম কিছু চিত্র। কারো বাসায় কিনতে পারেনি চাল-ডাল, আবার কেউ কিনতে পারেনি লাচ্ছা সেমাই, কেউ দেখতেই পায়নি মাছ-মাংস। আবার অনেকে কিনতে পারেনি নতুন জামা-কাপড়। এদের কেউ কেউ আফসোস প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
টাকা না পাওয়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুর রশিদ তিনি বলেন, আমার কাছে কিছু টাকা ছিল সেটা দিয়ে আমার ছোট দুই বাচ্চাকে জামা কিনে দিয়েছি। আমি কিছুই কিনতে পারিনি। আশা ছিল অন্তত ঈদের দিন রাতে হলেও টাকা পাব। কিন্তু ওই টাকা না পাওয়ায় আমি এক ছটাক মাংস বাসায় কিনে দিতে পারেনি। মনের ভিতর খুব কষ্ট লাগছে। এমন ঈদ অতীতে কোনদিন কাটেনি।
কান্না জড়িত কন্ঠে দুই প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ের মাতা রাশেদা বেগম বলেন, আমার দুই পাগলের জন্য কোনো নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে পারেনি। এমনকি লাচ্ছা সেমাই আর একটু মাংসের ব্যবস্থা করে দিতে পারিনি। টাকা পেলে চাল ডাল, তরিতরকারি কিনে ঈদটা আনন্দে কাটাতে পারতাম। গরিবের জন্য ঈদ না।
এসব বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রবিউল করিম জানান, আমি মনে করেছিলাম ঈদের আগে সবাই ভাতার টাকা পেয়ে গেছে। আমরা পেরোল পাঠিয়েছি। কাল আরো বিস্তারিত জানাতে পারবো।
এসব বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ন আহবায়ক ফিরোজ আলী বলেন, ঘটনাটি শুনে খুব খারাপ লেগেছে। ঈদের আগে গরিব মানুষের ওই টাকাগুলো দেয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে পুরো রাজশাহী জেলার জন্য পেরোল পাঠানো হয়েছে। কেন টাকা পায়নি সেটা জানি না তবে খুব দ্রুত তারা টাকা পেয়ে যাবেন। এই সপ্তাহ না হলে সামনের সপ্তাহের মধ্যে ইনশাল্লাহ টাকা পেয়ে যাবেন তারা।