শ্বশুরকে জামাইয়ের ফোন: আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক যুবকের বিরুদ্ধে দা দিয়ে গলা কেটে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে ফোন করে শ্বশুরকে ঘটনাটি জানিয়েছেনও তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টার দিকে শ্বশুরকে ফোন করার পরই পালিয়ে যান অভিযুক্ত যুবক। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তালাবদ্ধ ঘর থেকে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার এবং পাশ থেকে রক্তমাখা দা জব্দ করে।
নিহত নারীর নাম নাদিরা আক্তার (২৬)। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ঝিকাতলা মাইজহাটি গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের স্ত্রী। তাঁরা শ্রীপুরে ভাড়া বাড়িতে থেকে কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
নাদিরার বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে জামাই আমিনুল ইসলাম আমাকে ফোন করে বলে, “আপনার মেয়েকে মেরে ফেলছি। আপনি এসে লাশ নিয়ে যান।” এই কথা বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এরপর আমি কল করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে মেয়ের নম্বরে ফোন করলে তা-ও বন্ধ পাওয়া যায়।’
নাদিরার ছোট ভাই রাজিব মিয়া জানান, তিনিও শ্রীপুরে ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন। একই ভবনের নিচতলায় তাঁর বোন এবং তিনি দোতলায় থাকতেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি কর্মস্থলে যান এবং তখন বোনের ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। বেলা ১১টার কিছু সময় পর বাবা ফোন করে ঘটনাটি জানান। পরে তিনি দ্রুত বাসায় ফিরে দেখেন বোনের ঘর তালাবদ্ধ। এরপর তালা ভেঙে রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।
রাজিব বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় আপার সঙ্গে কুশল বিনিময় হতো। আপা আমাকে সাবধানে কাজ করতে বলতেন। তালাবদ্ধ ঘর দেখে মনে করছিলাম আপা কর্মস্থলে চলে গেছে। এটা তো জানতাম না নিষ্ঠুর দুলাভাই আপাকে খুন করে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে গেছে। আপাকে বিয়ে করার আগেও সে আরেকটা বিয়ে করে। সেই বউকেও হত্যার পর জেল খেটেছে। বিয়ের পর বিষয়টি জানতে পারি। আপাকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে খুবই নির্যাতন করত।’
বাড়ির মালিক কামরুজ্জামান জানান, তিনি ঘটনাটি জানার পরপরই শ্রীপুর থানার পুলিশকে অবহিত করেন। এই দম্পতি ছয় বছর ধরে তাঁর বাসায় ভাড়া ছিল।
এ বিষয়ে মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ হাসমতউল্লাহ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল হতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে দা জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’