সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ঘটনাটি রাজনৈতিক নয় বরং ব্যক্তিগত বিরোধ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আমীর মাওলানা শাহিনুর আলম।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জে জেলা জামায়াতের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ করেন এবং বিএনপি কর্তৃক জামায়াতকে জড়িয়ে রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা শাহিনুর আলম জানান, গত ১৭ এপ্রিল উল্লাপাড়া পৌর বাস টার্মিনালে ইজারাকৃত চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজাদ হোসেন এবং ইজারাগ্রহীতা হাফিজুল ইসলামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আজাদ হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় ১৫০-২০০ জন লোক হাফিজুল ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলা চালায়। পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পরদিন ১৮ এপ্রিল রামকান্তপুর গ্রামের লোকজন জুমার নামাজের পর আজাদ হোসেনের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। জামায়াতের পক্ষ থেকে এ হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং আহতদের আরোগ্য কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাফিজুলের সম্পৃক্ততা জানানো হলে তারা নিজ উদ্যোগে হাফিজুল ইসলামকে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে আইনের হাতে তুলে দেন। জেলা আমীরের ভাষায়, এটি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
তবে ঘটনার পরপরই জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এটিকে সাধারণ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হিসেবে উল্লেখ করলেও পরে জামায়াতের ওপর দায় চাপিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়ানো হয়। এর প্রেক্ষিতে বাঙালা ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাওলানা আমিনুল ইসলামসহ নেতাকর্মীদের উপর হামলা করা হয় এবং অন্তত ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং বড়হর ইউনিয়নের দুটি অফিস ভাঙচুর করা হয়।
এছাড়াও গতকাল ছাত্রদলের ব্যানারে একটি মিছিল থেকে “ধর ধর শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর” জাতীয় উসকানিমূলক ও ফৌজদারি অপরাধসংশ্লিষ্ট স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন জামায়াত আমীর।
আজ জেলা বিএনপির স্মারকলিপি প্রদান ও সমাবেশ থেকেও উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হয়, উল্লাপাড়ার ঘটনাটি কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয় এবং এ ঘটনায় জামায়াতের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং বিএনপির দায়ের করা মামলার অধিকাংশ আসামিই বিএনপি সংশ্লিষ্ট।
জামায়াতের নেতৃবৃন্দদের এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে জেলা আমীর বলেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন।