পোলিও টিকায় ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞা: গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ‘টাইম বোমা’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক কঠোর সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছে, পোলিও টিকার চালান আটকে রাখার মাধ্যমে ইসরাইল গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি ‘টাইম বোমা’ স্থাপন করছে, যা যে কোনো সময় একটি বড় আকারের মহামারির রূপ নিতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই নীতির সরাসরি লক্ষ্য গাজার শিশুদের দিকে—এটি একটি আসন্ন স্বাস্থ্য বিপর্যয়।’
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, পোলিও প্রতিরোধে কয়েক মাসের প্রচেষ্টাকে এই নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ ব্যর্থ করে দিতে পারে।
বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়, ‘গাজায় বর্তমানে ৬ লাখ ২ হাজারের বেশি শিশু পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার এবং দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতার ঝুঁকিতে রয়েছে, যদি এই টিকা নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে—যাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডটিতে পোলিও টিকা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে গাজাজুড়ে শিশুদের টিকা নিশ্চিত করতে নিরাপদ করিডোর চালু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে—ইসরাইলের কঠোর অবরোধের ফলে গাজায় মারাত্মক মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। খাদ্যাভাবে অভূতপূর্ব দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে এবং ধসে পড়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলি হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এরই মধ্যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) একটি মামলা চলছে।