সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তকে হত্যা

ভারতের কর্ণাটকের এক শহর ম্যাঙ্গালুরু। শহরটিতে সম্প্রতি সুহাস শেঠি নামে এক রাজনৈতিক কর্মীকে ব্যস্ত সড়কে সংঘবদ্ধভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড অস্থির করে তুলেছে শহরটিকে। হত্যার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে আরেক হত্যাকাণ্ডের কথা। হত্যাকাণ্ডের শিকার সুহাস শেঠি নিজেই হত্যা করেছিলেন এক ব্যক্তিকে। অভিযোগ উঠেছে, ওই ব্যক্তির পরিবার খুনি ভাড়া করে সুহাসকে হত্যা করিয়েছে। আর এই খুনিদের ভাড়া করতে পরিবারটি কাজে লাগিয়েছে সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণ।
গত ১ মে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উত্তাল হয়ে আছে ম্যাঙ্গালুরুর পরিবেশ। কোথাও একসঙ্গে কয়েকজনের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার সুহাস শেঠি স্থানীয় ডানপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সুহাস শেঠি গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। সেই গাড়িতে একটি পণ্যবাহী গাড়ি ধাক্কা দেয়। এরপর গাড়ি থামালে ব্যস্ত সড়কের ওপর দা ও তলোয়ার নিয়ে কমপক্ষে পাঁচজন সুহাসের ওপর হামলা চালায়।
এই ঘটনায় ৮ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে কর্ণাটক পুলিশ। ৫টি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
তদন্তের সময়, গ্রেপ্তার দুই অভিযুক্ত দাবি করেছে, তাঁরা সুহাস শেঠিকে খুন করতে টাকা পেয়েছে আরেক খুন হওয়া ব্যক্তির পরিবারের কাছ থেকে। তখন পুলিশ অতীত উদঘাটন শুরু করে।
২০২২ সালে মুসলিম যুবক মোহাম্মদ ফাযিল হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন সুহাস শেঠি। এর আগে বিজেপি যুবকর্মী প্রবীণ নেট্টারুকে হত্যায় অভিযুক্ত করে ফাযিলকে হত্যা করে সুহাস।
ফাযিলের হত্যাকাণ্ডের পর মুসলিম সেন্ট্রাল কমিটি তাঁর পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় এসে পরিবারটিকে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়।
এখন সুহাস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত একজন দাবি করেছেন, তিনি এই খুনের জন্য ৩ লাখ টাকা পেয়েছেন। আরেকজন বলেছেন, তাকে ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল।
এই অর্থের পরিমাণ এখন ম্যাঙ্গালুরুতে প্রশ্ন তুলেছে, ফাযিল হত্যার পর তাঁর পরিবারকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকাই কি এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছে?
এদিকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বি. ওয়াই. বিজয়েন্দ্র সুহাস শেঠির পরিবারের জন্য ২৫ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন।
বিজেপির এমএলসি সি. টি. রবি এবং অন্যান্য নেতা সতর্ক করেছেন, পুলিশ যদি ব্যবস্থা না নেয়, তবে ‘প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড’ চলতেই থাকবে। সুহাসের হত্যাকারীদের বিনা শাস্তি ছেড়ে দেওয়ার মনোভাব নিয়ে কেউ নেই।
