বাগেরহাট-৪ আসন বিলুপ্তির প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ, উত্তপ্ত মোরেলগঞ্জ

বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসন বিলুপ্তির প্রতিবাদে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক ঘণ্টার সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গতকাল শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে মোরেলগঞ্জ আব্দুল আজিজ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে আঞ্চলিক সাইনবোর্ড-বগী মহাসড়কে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং জনসাধারণ ভোগান্তিতে পড়ে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রজ্ঞাপনে জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে বাগেরহাট-৪ আসনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা এলাকার মানুষ ‘বঞ্চনা’ বলে অভিহিত করছেন। তারা মনে করছেন এটি জনআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাগেরহাট-৪ একটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আসন। জনগণের দীর্ঘদিনের সাংবিধানিক প্রতিনিধিত্ব হঠাৎ করে বাতিল করে দেওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা জেলার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ হলেও এই জনবহুল এলাকার আসন বাতিল করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
স্থানীয় এক নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মোরেলগঞ্জ-শরণখোলার মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপজেলা নিয়ে পৃথক সংসদীয় আসন থাকা সময়ের দাবি। এই সিদ্ধান্ত আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে।
বিক্ষোভে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির নেতা কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি ফকির তরিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল হক বাবুল, পৌর বিএনপির সভাপতি শিকদার ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফকির রাসেল আল-ইসলাম, মহিউদ্দিন বাদল, সামাদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এক ঘণ্টার সড়ক অবরোধ শেষে নেতারা ঘোষণা দেন—বাগেরহাট-৪ আসন পুনর্বহাল না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আসন পুনর্বিন্যাস একটি জাতীয় পর্যায়ের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতি আসনে সমান জনসংখ্যাভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাই মূল উদ্দেশ্য। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই সিদ্ধান্ত সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।