পঞ্চগড়ে সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও ডিসি-এসপির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিন হত্যা মামলায় ১৫৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। একইসঙ্গে আদালত মামলাটি তদন্ত করে এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (আমলি আদালত-১) বিচারক এ নির্দেশ দেন। মামলাটি করেন নিহত আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল ওহাব।
২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশে অংশ নেন আব্দুর রশিদ আরেফিন। অভিযোগে বলা হয়, ওই দিন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় বিএনপির কর্মসূচিতে অতর্কিত হামলা চালায়। পুলিশ ছোঁড়ে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস। হামলার সময় আরেফিনকে মারধর ও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরেফিনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে নুরুজ্জামান বাবু নামের এক কর্মীকেও গুরুতর আহত করা হয়, যার মাথায় পরে পাঁচটি সেলাই দিতে হয়। দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে প্রায় ৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকার ক্ষতি হয় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী দাবি করেন, তৎকালীন সরকারের ভয়ে এবং প্রাণনাশের আশঙ্কায় এতদিন তিনি মামলা করতে পারেননি। অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি আইনি পদক্ষেপ নেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে—জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনকে। আরও আছেন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সাবেক এমপি নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা, সাবেক এমপি মজাহারুল হক প্রধান, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, তৎকালীন জেলা প্রশাসক, সাবেক পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি-সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
এছাড়াও মামলায় ৪০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলার আদেশ হাতে পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।