বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

চার দফা দাবিতে আগামী ২০ জুলাই বৃহত্তর চট্টগ্রামে গণ ও পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা থাকলেও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে নগরীর কদমতলীতে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ‘বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশন’ এর এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের নেতারা জানান, সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য ২০ জুলাই পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় বৈঠকে ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে পরিবহন খাতের চলমান সমস্যাসহ ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন এবং ‘ইকোনমিক লাইফ’ নীতিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি নিয়ে আলোচনা হবে।
যদি ওই বৈঠকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবিগুলোতে সন্তোষজনক সমাধান এলে পরবর্তী কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। অন্যথায় ফের ধর্মঘটের ঘোষণা আসতে পারে।
তারা বলেন, কেন্দ্রীয় বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত আসে, সেটির ওপর আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নির্ভর করবে। আপাতত বৃহত্তর চট্টগ্রামে ২০ জুলাইয়ের ধর্মঘট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার গাড়ি ‘ইকোনমিক লাইফ’ নীতিমালার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে সংসদে পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন শুরু থেকেই সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি। সংসদে আমাদের দুইজন প্রতিনিধি থাকলেও তারা বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি।
তিনি বলেন, বর্তমানে পরিবহন খাতের ওপর এক ধরনের বৈরী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যেমন যাবজ্জীবন সাজার বিধান রয়েছে, মালিকদের বিরুদ্ধেও একই রকম শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এ ধরনের আইন কার্যকর থাকলে পরিবহন খাত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে আন্দোলনের বিষয়টি আলোচনা করেছি। আগামী ২০ জুলাই ঢাকায় মালিক-শ্রমিকদের যৌথ ফোরাম-বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন ও বাস-ট্রাক অনার্স অ্যাসোসিয়েশন-একটি বৈঠক ডেকেছে। সেখানেই দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
কফিল উদ্দিন আহমেদ আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের দাবি কেন্দ্রীয়ভাবে উত্থাপন করা হবে। আমরা জাতীয় পর্যায়ে বিষয়টি সরকারকে জানাব এবং ইতিবাচক সমাধানের জন্য কাজ করব।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরী, সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির সোহেল, একরামুল করিম, খোরশেদ আলম, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ফারুক খান, নুরুল ইসলাম, সৈয়দ হোসেন, মো. শাহজাহান, মো. হাবীব, মোবারক হোসেন, আলাউদ্দিন, মো. জাফর, আজিজুল হক, মো. মিজান, মো. মুসা, মো. অলি আহমদ, রবিউল মাওলা, আজিম খান, কামাল উদ্দিন, মুছা বাবুল, আনোয়ারা, তুহিন প্রমুখ।
এর আগে, ১৫ জুলাই চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও ইকোনমিক লাইফ নীতিমালা পুনর্বিবেচনাসহ চার দফা দাবিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ২০ জুলাই ২৪ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল।