ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের লেবার এমপিদের আহ্বান

ফিলিস্তিনকে অবিলম্বে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন লেবার পার্টির ৫৯ জন এমপি। একইসঙ্গে গাজায় চলমান ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গত শনিবার (১২ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লেবার পার্টির মধ্যপন্থি ও বামপন্থি উভয় ধারার প্রতিনিধিত্বকারী এসব এমপি গত বৃহস্পতিবার একটি যৌথ চিঠির মাধ্যমে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে আহ্বান জানান। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে Labour Friends of Palestine and the Middle East (LFPME) নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে।
চিঠিতে এমপিরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি তথাকথিত “মানবিক শহর” গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন, যেখানে গাজার সব ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হবে। তারা এই পদক্ষেপকে “ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার পরিকল্পনা” এবং “জোরপূর্বক জনগণ স্থানান্তর” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়, “গাজার সব ফিলিস্তিনিকে রাফাহে বন্দি করে রাখার যে পরিকল্পনা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী তুলে ধরেছেন, তা এক ধরনের জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”
এমপিরা আরও বলেন, “আমরা যদি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিই, তাহলে নিজেরাই আমাদের বহুদিনের ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’ নীতিকে দুর্বল করে ফেলি। এর ফলে এই বার্তা যায় যে দখলদারিত্ব ও বর্তমান স্থিতাবস্থা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, যা ধীরে ধীরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সম্পূর্ণ দখল ও সংযুক্তির পথ করে দেয়।”
ইউএনআরডব্লিউএ অর্থায়ন পুনরায় চালুর দাবি
চিঠিতে আরও বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন এমপিরা, যার মধ্যে রয়েছে:
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর অর্থায়ন পুনরায় চালু করা;
ইসরায়েলি বসতিতে উৎপাদিত পণ্যের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা;
বন্দি ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মুক্তির বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ জোরদার করা।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই অভিযানকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ এবং ‘জাতিগত নিধনের সম্ভাব্য উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।