ব্রাজিলের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প, বলসোনারোর বিচারকও নিষেধাজ্ঞার আওতায়

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে সাবেক ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর মামলার বিচারক আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে বুধবার মার্কিন প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের বিরুদ্ধে “বিচারের আগেই আটক”, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন এবং স্বৈরাচারী আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলসোনারো ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে তদন্ত পরিচালনা করছেন।
বলসোনারো এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিচারক মোরেসকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই ট্রাম্প তার সমর্থনে মোরেসের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং ব্রাজিলের পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন।
নতুন শুল্কনীতিতে ব্রাজিলের রপ্তানি পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি কর বসানো হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য যেমন কমলার রস, বিমান যন্ত্রাংশ ও জ্বালানি পণ্য—এই বাড়তি শুল্কের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, “ব্রাজিলে চলছে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন ও সেন্সরশিপ,” যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য হুমকি। তিনি এর আগে ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকে বলসোনারোর বিরুদ্ধে ‘হয়রানিমূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ার অভিযোগে চিঠি দিয়েছিলেন এবং উচ্চ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলেন।
ব্রাজিল ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের এ শুল্ক আরোপের পাল্টা ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করবে। উল্লেখ্য, চীনের পর যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার, ফলে এই শুল্ক বৃদ্ধি দেশটির অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যার মাধ্যমে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে কৌশলগত সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।