জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে বিতর্কে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম: “শিবিরের একক ভূমিকা নয়”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক যেন থামছে না। এবার এই বিতর্কে সরাসরি যুক্ত হলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক খোলামেলা পোস্টে তিনি স্পষ্ট ভাষায় লেখেন, "অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা অস্বীকার করা হয়নি, তবে এটি কখনোই তাদের একক পরিচালনায় হয়নি।"
নাহিদ ইসলামের দাবি, জুলাইয়ের ছাত্র অভ্যুত্থান ছিল বিভিন্ন মত, মতাদর্শ ও পটভূমি থেকে আসা তরুণদের সম্মিলিত প্রয়াস। তিনি লেখেন, “শিবিরের কোনো ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশন ছিল না। ক্যাম্পাসে আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, সকল পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ এবং একটি নতুন ছাত্র সংগঠনের চিন্তা থেকেই ছাত্রশক্তির জন্ম।”
তিনি অভিযোগ করেন, শিবির নেতা সাদিক কাইয়ুম সম্প্রতি এক টকশোতে মিথ্যাচার করেছেন। তার ভাষায়, “ছাত্রশক্তি গঠনে শিবিরের সম্পূর্ণ নেতৃত্ব ছিল—এটি ভিত্তিহীন। 'গুরুবার আড্ডা' পাঠচক্র এবং ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগরের কয়েকটি ছাত্রদলের অংশগ্রহণে গঠিত হয়েছিল ছাত্রশক্তি। শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তারা কখনো নেতৃত্ব দেয়নি।”
সাদিক কাইয়ুম নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিলেও বাস্তবে তিনি এমন কোনো দায়িত্বে ছিলেন না বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ।
পোস্টে তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সম্প্রতি বলেছেন, জাতীয় সরকারের কোনো প্রস্তাবনা ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হয়নি। এ বক্তব্য ‘সত্য নয়’ বলেই মন্তব্য করেন নাহিদ।
তার ভাষায়, “৫ আগস্ট রাতে আমরা প্রেস ব্রিফিংয়ে স্পষ্টভাবে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এরপর তারেক রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং হয়, যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। তিনি তাতে সম্মত হননি। পরিবর্তে নাগরিক সমাজ দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন।”
এছাড়া ৭ আগস্ট ভোরে বিএনপি মহাসচিবের বাসায় অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয় বলেও জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, “কে কোথায় বসবে, কে ক্ষমতার ভাগ পাবে—এখন সেই গোষ্ঠীগত স্বার্থের লড়াই শুরু হয়েছে। আমরা সব পক্ষের সাথে কথা বলেছি, কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজেদের বিবেচনায়।”
পোস্টের শেষে তিনি ইঙ্গিত দেন, “কারা ক্ষমতার ভাগ বাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত অন্যদিন বলবো।”