“এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়, ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ” — পঞ্চগড়ে এনসিপির পদযাত্রায় হুঁশিয়ারি

গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার ডাক দিয়ে “জুলাই পদযাত্রা” কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চগড়ের তেঁতুলতলায় জনসভা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার পদযাত্রার তৃতীয় দিন শেষে আয়োজিত পথসভায় কেন্দ্রীয় নেতারা সীমান্ত হত্যা, পুশ-ইন, দুর্নীতি ও স্বাস্থ্যসেবার অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন।
সভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত ৫০ বছরে কোনো সরকার সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারেনি। এখন গুলি নয়, পুশইন করা হচ্ছে। এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়, ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ। যদি পাঠাতেই হয়, হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান, আমরা তাদের বিচারের আওতায় আনবো।”
তিনি বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে এনসিপির ‘জুলাই সনদ’ হবে ভবিষ্যৎ রূপরেখা।
উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “পঞ্চগড়ে স্বাস্থ্যসেবা এতটাই নাজুক যে রোগীদের রংপুর বা অন্যান্য জেলায় পাঠাতে হয়, আর অনেকেই পথেই মারা যান। চিনিকল চালুর প্রতিশ্রুতি ছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। এর পেছনে কে বা কারা বাধা, তা পঞ্চগড়বাসী জানেন।”
তিনি আরও বলেন, “পাথর উত্তোলনের নামে রাতের আঁধারে অবৈধ ড্রেজার চলছে, চাঁদাবাজি চলছে—এগুলো রুখতেই এনসিপি কাজ করছে।”
দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “পঞ্চগড়ে এখনও চাঁদাবাজি, দখলদারি, দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতারা চাঁদাবাজি করে ভারতে পালিয়ে গেছে। এখন পালানোর পথও পাবে না।”
তিনি প্রশাসন ও পুলিশ সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণাও দেন, বলেন, “যে প্রশাসন মধ্যরাতের নির্বাচন করেছে, সেই প্রশাসন সংস্কার না হলে নির্বাচন নয়।”
সভায় কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. তাসনিম জারা বলেন, “রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী কোনো দলের নয়, জনগণের হয়ে কাজ করবে—এটাই হবে নতুন ব্যবস্থার মূলনীতি। আমরা আর সেই রাষ্ট্রে ফিরতে চাই না যেখানে নিজ দেশের নাগরিক গুম-খুনের শিকার হয়।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, যিনি বলেন, “পঞ্চগড়বাসীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান এনসিপির হাত ধরেই আসবে। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অবকাঠামোতে আমরাই পরিবর্তন আনবো।”
নেতারা আগামী ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে "জুলাই সনদ" ঘোষণা অনুষ্ঠানে সবার উপস্থিতি কামনা করেন।