‘মুজিববাদের কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট এখনো টিকে আছে’ — শিবির নেতা সাদিক কায়েম

জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও মুজিববাদের কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট এখনো বহাল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, "দেশে কালচারাল ফ্যাসিস্টরা এখনো সক্রিয়। তাদের সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে না সরালে ফ্যাসিবাদ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।"
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাইমুম শিল্পগোষ্ঠী আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল্লাহ তাহিরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি
সাদিক কায়েম বলেন, “জুলাই বিপ্লবে আমাদের একজন সংস্কৃতিকর্মী শহীদ হয়েছেন— উচ্চারণ শিল্পীগোষ্ঠীর সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ তাহির। আমরা তারসহ সব শহীদদের জন্য দোয়া করি। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও এর গোড়া এখনো পুরোপুরি উপড়ে ফেলা যায়নি। মুজিববাদ ও তাদের সাংস্কৃতিক আধিপত্য এখনো সাংস্কৃতিক পরিসরে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “গত এক বছরে আমাদের উচিত ছিল একাডেমিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বৃহৎ পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করা, কিন্তু সেখানে ঘাটতি রয়ে গেছে।”
তিনি জানান, “আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সে লক্ষ্যেই আয়োজন করেছি ‘জুলাই জাগরণ ও কালচারাল ফেস্ট’। এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এখানে শহীদ পরিবার, গাজী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ জনগণ অংশ নেবেন।”
আন্দোলনের চিত্র ও ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতেই এ আয়োজন বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “গত ১৬ বছরে খুনি হাসিনা দেশে যে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছেন, যে ‘আয়নাঘর’ তৈরি করেছেন, ছাত্র-জনতার ওপর চালিয়েছেন নির্যাতন—সেই বাস্তবতাগুলোও কালচারাল ফেস্টে তুলে ধরা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মুজিববাদের ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। সেই দুর্নীতির চিত্রও এই আয়োজনে তুলে ধরা হবে। আমাদের এই আয়োজনে থাকবে চিত্র প্রদর্শনী, ফটোগ্যালারি, স্মারক, গ্রাফিতি প্রদর্শন, বইমেলা ও নানা সাংস্কৃতিক উপাদান।”
‘জুলাই ফেস্ট’-এর অন্যতম আকর্ষণ ‘আয়নাঘর’ নামে একটি ধারণামূলক প্রদর্শনী। এখানে দর্শনার্থীরা আয়নার মাধ্যমে প্রতিবাদের বহুমাত্রিকতা অনুভব করতে পারবেন। থাকবে ‘শহীদ মানচিত্র’, যেখানে ৮টি বিভাগের প্রতীকী চিত্রায়নে ফুটে উঠবে আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো।
শিশুদের জন্য থাকবে কিডস জোন, যাতে থাকবে চিত্রাঙ্কন, গল্প পাঠ, মিনি থিয়েটার ও খেলার আয়োজন।
সাদিক কায়েম বলেন, “জুলাই জাগরণ কেবল অতীত স্মরণ নয়, এটি ভবিষ্যতের সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুতির অংশ। নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা জুলাই বিপ্লবের চেতনা, আত্মত্যাগ ও সংস্কৃতি সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরতে চাই।”