আ. লীগের মতো জাপার কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে

আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হলে জিএম কাদেরের কেন বিচার হবে না? আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হব।
রোববার (১ জুন) জিএম কাদেরসহ ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবং বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর জাতীয় পার্টির হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন। গণঅধিকার পরিষদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে।
রাশেদ খান বলেন, এই দেশের গণতন্ত্র হত্যার জন্য হাসিনা যেভাবে দায়ী, ঠিক একইভাবে জিএম কাদেরও দায়ী। তার (জিএম কাদের) নামে মামলা হলেও তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? উপদেষ্টা পরিষদ বা সরকারের কে জাতীয় পার্টিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে? অন্যথায় কেন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হচ্ছে না, মিছিল মিটিংয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে না? জাতীয় পার্টির মিছিল মিটিংয়ে আওয়ামীলীগ যুক্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতোপূর্বে জিএম কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে দূরে রেখে নির্বাচন করা যাবে না, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে না।’ এখান থেকে প্রমাণিত হয়, জিএম কাদের যে হাসিনার এক নম্বর দোসর। হাসিনা দিল্লি পালিয়েছে, জিএম কাদের কীভাবে এখনো জেলের বাইরে? বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করুন। অন্যথায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আমরা থামাতে পারব না। সারা দেশে আন্দোলন শুরু হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে রাশেদ খান বলেন, চা-নাস্তা খাওয়ানোর সংলাপ করবেন না। সংলাপ ফলপ্রসূ করতে সিদ্ধান্ত নিন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। আমাদের দাবি, আগামী সেপ্টেম্বরে তফসিল ও ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একে-অপরের পরিপূরক।
সমাবেশে এর আগে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাসান আল মামুন প্রমুখ।
বক্তব্যে ফারুক হাসান বলেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান দোষর। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলেও জাতীয় পার্টি এখনো বহাল তবিয়তে। আমরা খবর পেয়েছি সরকারের ৩ জন উপদেষ্টা জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রেখেছেন, তারা আওয়ামী লীগকে জাতীয় পার্টির মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা গণঅধিকার পরিষদ পরিষ্কারভাবে বলছি, জাতীয় পার্টি আজ থেকে নিষিদ্ধ, যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিরোধ হবে।
হাসান আল মামুন বলেন, গত ১২ মে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিতভাবে জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবি করা হলে নির্বাচন কমিশন কিংবা সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিগত ২০১৪, ১৮ এবং সর্বশেষ ২৪ এর আওয়ামী ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রথম সহযোগী ছিল এই জাতীয় পার্টি। এদিকে হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পরেও জিএম কাদের এখনো গ্রেপ্তার হননি। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার এবং জাতীয় পার্টির নিবন্ধন বাতিল করা হোক।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, মাহফুজুর রহমান খান, রবিউল হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান বাপ্পী প্রমুখ।