এআই দিয়ে তৈরি ভুয়া ভিডিও: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নামে বক্তব্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তির চেষ্টা, শনাক্ত করল বাংলাফ্যাক্ট

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নামে মিথ্যা বক্তব্য প্রচারের অপচেষ্টা শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া গবেষণা ইউনিট ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান টিম জানিয়েছে, গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্য বলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে, যা এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি এবং পুরোপুরি ভুয়া।
ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়: “চাঁদাবাজ হোক বা যাই হোক, ওরা তো আমাদেরই সন্তান। হ্যাঁ, গুলশানে যে ধরা পড়েছে সে আমাদের এনসিপির নেতা। আমি বকে দিয়েছি, বলেছে আর করবে না।”
তবে বাংলাফ্যাক্টের যাচাইয়ে দেখা যায়, ভিডিওটির কোনো সত্যতা নেই এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের কোনো বিশ্বাসযোগ্য সূত্র মেলেনি।
এছাড়া, ভিডিওটির ডান পাশে নিচে 'Veo' লেখা দেখা গেছে, যা গুগলের এআই-ভিত্তিক একটি ভিডিও জেনারেশন টুলের ইঙ্গিত দেয়। এই টুলের সাহায্যে শুধুমাত্র টেক্সট ইনপুট দিয়ে কণ্ঠসহ ভিডিও তৈরি করা সম্ভব। ভিডিওটির ইংরেজি সাবটাইটেলেও বাক্য গঠন, ব্যাকরণ ও বানানে একাধিক ভুল রয়েছে, যা এটি এআই দিয়ে বানানো এবং ভুয়া হওয়ার আরও একটি প্রমাণ।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই গুলশানে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ ও ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সদস্য পরিচয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় প্রবেশ করে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে উভয় সংগঠন অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়।
এই ঘটনার জেরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নামে মনগড়া বক্তব্য ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশে গুজব, ভুয়া খবর ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে তথ্য যাচাই এবং সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা, যাতে জনগণ প্রকৃত তথ্যের নাগাল পেতে পারে।