২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: আসামিদের খালাস চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিন চলছে

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি চলছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক রায়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের দুটি মামলাতেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন। এরপর চলতি বছরের ১৯ মার্চ এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শেখ হাসিনাসহ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেয় এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটিতে অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়। প্রায় এক দশকের দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করে।
রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার সম্পূর্ণ নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর বিচারপতি সহিদুল করিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শুরু হয়।
তবে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চে নতুন করে শুনানি শুরু হয়। পরে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ‘লিভ টু আপিল’ করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে এখন চলছে পূর্ণাঙ্গ আপিলের শুনানি।