মাইলস্টোন দুর্ঘটনা: ৪৫ জন চিকিৎসাধীন, ৮ জন ক্রিটিকাল

রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৫ জন আহত ও দগ্ধ রোগী জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক (ক্রিটিকাল), ১৩ জন সিভিআর ক্যাটাগরিতে এবং ২৪ জন ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে রয়েছেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে রোগীদের নতুনভাবে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ১২ ঘণ্টা পরপর সিনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক হবে, যাতে চিকিৎসা সেবা সর্বোচ্চ মানে নিশ্চিত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় এসে বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনে সরাসরি চিকিৎসায় অংশ নেবেন। তারা বাংলাদেশের চিকিৎসা পদ্ধতিকে সমর্থন করেছেন, তবে কিছু ক্ষেত্রে পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের অবস্থানের সময়সীমা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, বুধবার রাতে উত্তরা রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল থেকে রাফি (১২) নামে এক শতাংশ দগ্ধ এক শিশুকে রেফার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এই শিশুসহ এখন পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৫ জন।
দগ্ধদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছেছে। বুধবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৪০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। দলটির সদস্যরা হলেন—ডা. বিজয়া রাও, পুন লাই কুয়ান ওমি এবং লিম ইউ হান জোভান। এর আগে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতেই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. চোং সি জ্যাক ঢাকায় আসেন।
শুধু সিঙ্গাপুর নয়, ভারত থেকেও চিকিৎসক দল এসেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে জানিয়েছেন, দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল ও সাফদারজং হাসপাতালের দুজন বার্ন ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ এবং একজন প্রশিক্ষিত নার্স নিয়ে তিন সদস্যের একটি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তারা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে রোগীদের চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ শুরু করেন এবং বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।
ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও মানবিক সহায়তার প্রতিফলন।